‘এ’ ক্যাটাগরির চার কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের হতাশা

Date: 2022-12-31 16:00:13
‘এ’ ক্যাটাগরির চার কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের হতাশা
বছরের শেষ সপ্তাহে (২৫-২৯ ডিসেম্বর) তালিকাভুক্ত চার কোম্পানি শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের হতাশ করেছে। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিগুলোর শেয়ার ঝলক দেখিয়ে লেনদেনের শীর্ষে উঠ এসেছে। কিন্তু তারপরও বিনিয়োগকারীদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।কোম্পানিগুলো হলো- মুন্নু সিরামিক, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স এবং মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। কোম্পানিগুলো সবগুলোই ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানি। ডিএসই তথ্য বিশ্লেষণে এ তথ্য জানা গেছে।বিনিয়োগকারীরা বলছেন, কোম্পানিগুলোর ভালো ডিভিডেন্ড ও ভালো ফান্ডামেন্টাল দেখে তারা কোম্পানিগুলোর শেয়ারে বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু তারপরও ইতিবাচক প্রবণতার বাজারে তারা কোম্পানিগুলোর শেয়ারে লোকসানা দেখছেন।মুন্নু সিরামিক: কোম্পানিটি গত কয়েক সপ্তাহজুড়েই ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার ২৫৯টি শেয়ার। যার বাজার মূল্য ৪৪ কোটি ৪৭ লাখ ১০ টাকা। এতে করে কোম্পানিটি সাপ্তাহিক লেনদেনে তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। তবে লেনদেনের এমন উর্ধ্বমূখী গতি থাকলেও শেয়ারদর কমায় সপ্তাহশেষে লোকসান গুণতে হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের।বিনিয়োগকারীরা বলছেন, কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা কম। রিজার্ভ ভালো। সম্পদ মূল্য ভালো। যে কারণে কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের নজর বেশি। কোম্পানিটির মোট শেয়ার রয়েছে ৩ কোটি ৭৭ লাখ ২৪ হাজার ৩১৭টি। এরমধ্যে ৪৮.৩০ শতাংশই স্পন্সর ডিরেক্টরদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ১১.৮৪ শতাংশ। বিদেশিদের কাছে রয়েছে ০.১৭ শতাংশ। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৩৯.৬৯ শতাংশ।অর্থাৎ বাজারে কোম্পানিটির দেড় কোটিরও কম শেয়ার ফ্রি রয়েছে। যার কারণে এই কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ একটু বেশি থাকে সব সময়। কারণ অল্প শেয়ারের কারণে বিনিয়োগকারীদের এ সকল শেয়ারে বেশি চাহিদা থাকে। যার কারণে প্রায়ই এসব শেয়ারের বিক্রেতা সংকট তৈরী হয়। এতে করে কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর দ্রুত বৃদ্ধি পায়।মুন্নু সিরামিক সর্বশেষ ৩০ জুন ২০২২ সমাপ্ত অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। আগের বছরও ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।কোম্পানিটির রিজার্ভ রয়েছে ২৭৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা। যা পরিশোধিত মূলধনের বিপরীতে ৭.৩০ গুণ।ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট: এই কোম্পানিটিও স্বল্প মূলধনী কোম্পানি। যার শেয়ার সংখ্যা মাত্র ১১ লাখ ৯২ হাজার ৮০০টি। এরমধ্যে সরকার ও স্পন্সর ডিরেক্টরদের কাছে রয়েছে ৫৬.০৪ শতাংশ। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৬.৭৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৭.২২ শতাংশ।সর্বশেষ ৩০ জুন ২০২২ সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ৪০ শতাংশ ক্যাশ এবং ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে। আগের বছর দিয়েছিল ১৪০ শতাংশ ক্যাশ ও ২০ শতাংশ স্টক।কোম্পানিটির রিজার্ভ রয়েছে ১১৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা। যা পরিশোধিত মূলধনের বিপরীতে ১৮.১৭ গুণ।কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স এবং মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স: বিমা কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন কম থাকায় অতীতে কোম্পানিগুলোর শেয়ার থেকে বিনিয়োগকারীরা ভালো রিটার্ন পেয়েছে। কিন্তু গত দুই বছর যাবত বিমা খাতের শেয়ারে চলছে মন্দা অবস্থা। এখাতের সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ার এখন ফ্লোর প্রাইসে। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করার থেকে কিছু কিছু কোম্পানির শেয়ার দর প্রতিদিনই ১ শতাংশ কমে ক্রেতা সংকটে ভুগছে। এই রকম অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স এবং মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স।উল্লেখ্য, বিএসইসি সম্প্রতি যে ১৬৮টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করেছে, তার মধ্যে ৩৭টিই বিমা খাতের কোম্পানি। এই ৩৭টি কোম্পানির মধ্যে কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স এবং মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সও রয়েছে। ফলে এই দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীদেরও সপ্তাহজুড়ে হতাশায় পার করতে হয়েছে।

Share this news