ডুয়েল লিস্টিং, আলোচনা অনেকটুকু এগিয়েছে: বিএসইসি চেয়ারম্যান

Date: 2022-10-26 05:00:17
ডুয়েল লিস্টিং, আলোচনা অনেকটুকু এগিয়েছে: বিএসইসি চেয়ারম্যান
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম জানিয়েছে, ডুয়েল লিস্টিং হলে কোম্পানির মূলধন সংগ্রহের সুবিধা বাড়ে। চাইলে দুটি দেশ থেকে টাকা সংগ্রহ করা যায়। পাশাপাশি কোম্পানিগুলোর শেয়ারে তারল্য বেড়ে যায়। একটি কোম্পানি দুটি দেশে তালিকাভুক্ত হলে কোম্পানিটির সুনাম বাড়ে।বিএসইসির চেয়ারম্যান আরও জানিয়েছেন, ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করতে আলোচনা এগিয়েছে।তিনি বলেছেন, ‘ইউরোপের কোম্পানিগুলো এখন খারাপ করছে। বিনিয়োগকারীদের ভালো মুনাফা দিতে পারছে না। তারা চাচ্ছে বাংলাদেশে ভালো করা কোম্পানিগুলো যেন ইউরোপের শেয়ারবাজারে এসে তালিকাভুক্ত হয়। আর এই ডুয়েল লিস্টিং নিয়ে আমাদের আলোচনা অনেকটুকু এগিয়ে গেছে। আমাদের ভালো কোম্পানিগুলো তাদের বাজারেও তালিকাভুক্ত হবে। আর তাদের ভালো কোম্পানিগুলো আমাদের বাজারে তালিকাভুক্ত হবে।’বিএসইসি কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের কোম্পানিগুলোর দুই দেশে তালিকাভুক্তি খুব দরকারি। বিশেষ করে দেশের ভালো কোম্পানিগুলো যদি আমেরিকান স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হতে পারে, তাহলে বেশি ভালো হয়।বিএসইসি এই কমিশনার আরও মনে করেন, বিদেশিরা যে পদ্ধতিতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে সেটা বিনিয়োগকারীদের জন্য যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, আবার বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের জন্যও ঝূঁকিপূর্ণ। কারণ যখন ডলারের বিপরীতে টাকার মান যখন কমে যায়, তখন বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের মূল্য কমে যায়। তাই টাকার দাম কমতে থাকলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দেশের পূজিবাজারে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে বের হয়ে যায়। যদি কোম্পানিগুলো দেশের বাইরে তালিকাভুক্ত থাকত, তাহলে বিনিয়োগকারীরা এই ঝুঁকির মধ্যে পড়ত না।তিনি বলেন, ‘দুই দেশে তালিকাভুক্ত হলে বাংলাদেশি এই কোম্পানিগুলোর শেয়ার আগের চেয়ে বেশি সময় ধরে লেনদেন হওয়ার সুযোগ পাবে। এ ছাড়া দেশি কোম্পানিগুলো যদি দেশের বাইরে যায়, তারা কম খরচে মূলধন পাবে, তাদের স্বচ্ছতা বাড়বে। কোম্পানিগুলোকে সেই সুযোগ দিলে দেশের কোনো ক্ষতি হবে না।তিনি বলেন, ‘এখন কিন্তু অনেক দেশি কোম্পানি বাইরে থেকে ঋণ নিচ্ছে। যারা ঋণ নিচ্ছে তাদের কিন্তু বিনিময়হারের ঝুঁকি নিতে হচ্ছে। এর চেয়ে তাদের যদি ডুয়েল লিস্টিংয়ের সুবিধা দেয়া হয়, তাহলে তারা কম ঝুঁকিতে টাকা সংগ্রহ করতে পারত।’বিএসইসির চেয়ারম্যান বর্তমানে গ্রিসে অবস্থান করছেন। সোমবার তিনি সেদেশের শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি ১৭ থেকে ২০ অক্টোবর ২০২২ পর্যন্ত মরক্কোর মারাকেশে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অফ সিকিউরিটিজ কমিশনের (IOSCO) ৪৭তম বার্ষিক সভায় যোগদান করেন। দেশে ফেরার পথে তিনি গ্রিসের শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধানের সঙ্গে দেখা করেন।বৈঠকে বাংলাদেশ ও গ্রিসের স্টক এক্সচেঞ্জের মধ্যে ‘ডুয়েল লিস্টং’ এবং ‘ক্রসবর্ডার ট্রানজেকশন’ নিয়ে আলোচনা হয়। এটি বাস্তবায়িত হলে গ্রীক স্টক এক্সচেঞ্জে বাংলাদেশের উচ্চ পুঁজির কোম্পানি তালিকাভুক্ত হওয়ার সুযোগ থাকবে। অন্যদিকে, গ্রিসের বড় কোম্পানিগুলোর জন্য বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার সুযোগ থাকবে।বৈঠকে এ দুই দেশের শেয়ারবাজারে পারস্পরিক সংলাপ ও সহযোগিতা বৃদ্ধি, আইন প্রণয়ন, দক্ষতা উন্নয়ন ও শেয়ারবাজারে কর্মরত জনশক্তির প্রশিক্ষণ, শেয়ারবাজারে নতুন পণ্য ও সেবা তৈরির বিষয়েও আলোচনা হয়। দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই করার কথাও রয়েছে।

Share this news