ডিসেম্বরে পুঁজিবাজারে সুখবর

ফ্লোর প্রাইস আরোপের পর থেকে দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন কমার পাশাপাশি সূচকও প্রায় স্থবির হয়ে আছে। বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। সূচকের পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে পুঁজিবাজারে লেনদেনের পরিমাণ কমছে। তবে চলতি মাসে লেনদেনে সুখবর মিলেছে। এই মাসে এর আগের মাসের চেয়ে পুঁজিবাজারের দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ২৫ শতাংশ।ইবিএল সিকিউরিটিজের মাসিক পুঁজিবাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য উঠে এসেছে।গত এক বছরের বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ বছরের ডিসেম্বরে ডিএসইতে দৈনিক গড়ে ৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছে। আর আগের মাস নভেম্বরে লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের। সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ১ কোটি টাকা বা ২৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ।জানা যায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দৈনিক গড়ে ৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছে। এর পরের মাসে এ লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারে। গত ফেব্রুয়ারিতে এটি কমে দাঁড়ায় ৪ কোটি ৩০ লাখ ডলারে। এ বছরের মার্চে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল ৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এর পরের মাসে এটি কিছুটা বেড়ে ৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার হয়। গত মে মাসে দৈনিক গড়ে ৮ কোটি ২০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছে। এ বছরের জুনে এটি কমে দাঁড়ায় ৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারে। জুলাইয়ে এটি আরো কমে ৭ কোটি ২০ লাখ ডলারে দাঁড়ায়। আগস্টে দৈনিক গড় লেনদেন ৪ কোটি ডলারে নেমে আসে। গত সেপ্টেম্বরে এটি কিছুটা বেড়ে ৫ কোটি ৭০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছিল। অক্টোবরে ৪ কোটি ২০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৬ হাজার ২০৭ পয়েন্ট। এ বছরের ডিসেম্বরে সূচকটির অবস্থান দাঁড়ায় ৬ হাজার ২৪৬ পয়েন্টে।বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের কারণে একশ্রেণীর বিনিয়োগকারীর মধ্যে কিছুটা আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে। এতে বাজারে কিছুটা বিনিয়োগ বেড়েছে, যে কারণে লেনদেনও বেড়েছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এখনো অনেক বিনিয়োগকারী বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তারা এখনই বাজারে বিনিয়োগ না করে সামনে অনুকূল সময়ের জন্য অপেক্ষা করছেন।এদিকে চলতি বছরের শেষ সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক ও লেনদেন উভয়ই কমেছে। পুঁজিবাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের তুলনায় দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ কমে ৬ হাজার ২৪৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ৬ হাজার ২৪৯ পয়েন্টে। নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ কমে ২ হাজার ৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ২ হাজার ৯৫ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস দশমিক ১০ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৩৬৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১ হাজার ৩৬৫ পয়েন্টে। ডিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া মোট ৪০৫টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৮৬টির, কমেছে ৮৩টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২১১টির। এছাড়া লেনদেন হয়নি ২৫টির।ডিএসইতে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে ২ হাজার ১৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যেখানে আগের সপ্তাহে লেনদেন ছিল ২ হাজার ৯২৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক্সচেঞ্জটিতে সাপ্তাহিক লেনদেন কমেছে ৩১ দশমিক ১৩ শতাংশ। গত সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক গড়ে ৫০৪ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যেখানে আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল ৫৮৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।অন্যদিকে দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) গত সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই দশমিক ১১ শতাংশ কমে ১৮ হাজার ৫২০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৮ হাজার ৫৪১ পয়েন্টে। সিএসসিএক্স সূচকটি গত সপ্তাহ শেষে দশমিক ১১ শতাংশ কমে ১১ হাজার ৭৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহ শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ১১ হাজার ৮৮ পয়েন্টে। সিএসইতে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে ৪৬ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৭৪ কোটি ৬ লাখ টাকা। এ সময় সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৮৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬৮টির, কমেছে ৭১টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫০টির।