ডিএসইতে উত্থান তুলনায় পতন পাঁচগুন বেশি
![ডিএসইতে উত্থান তুলনায় পতন পাঁচগুন বেশি](https://stocknewsbd.s3.ap-southeast-1.amazonaws.com/5246/dse.jpg)
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সব ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দুইটি বাদে বাকী তিন ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন দুই স্টকেই লেনদেন পরিমাণ কমেছে। ডিএসইর লেনদেন কমে সাড়ে পাঁচশ কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। আর সিএসইর লেনদেন কমে ৬ কোটি টাকার ঘরে এসেছে। ডিএসইতে ১৪১টি কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। ২৯টির বেড়েছে। সিএসইতে ৬০টি কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। ২৫টির বেড়েছে। উভয় শেয়ারবাজারে বেড়েছে বিক্রির চাপ।পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, মঙ্গলবার ডিএসইতে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিত ছিল। বিক্রেতার চাপ বহুগুন বেশি ছিল। ডিএসইতে কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান তুলনায় পতন ৪ দশমিক ৮৬ গুন বেশি। অপরদিকে সিএসইতেও কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান তুলনায় পতন ২ দশমিক ৪০ গুন বেশি।আরও বলেন, সরকারের নতুন সময় সূচির প্রথম কার্যদিবস ডিএসইতে গত ২৪ আগস্ট পতন হয়েছিল। যা আগের টানা ছয় কার্যদিবস উত্থানের পর এই মন্দা। পতন পরের দুই কার্যদিবস (বৃহস্পতিবার ও রবিবার) উত্থানে ছিল পুঁজিবাজার। ওইসময় লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছিলো। পরের দিন সোমবার লেনদেনে ভাটা পড়ে। সেখান থেকে পরের দুই কার্যদিবস লেনদেন কিছুটা বাড়ে।পরেরদিন লেনদেন আবারো কমে। এরপরের কার্যদিবস লেনদেন বেড়ে ২৩শ কোটি টাকায় ওঠেছিল। পরে জোয়ার-ভাটায় চলে পুঁজিবাজারের লেনদেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর লেনদেন বছরের সেরা রেকর্ড করেছিলো। ওইদিন লেনদেন ২৮শ কোটি টাকা এসেছিলো। পরে ফের জোয়ার-ভাটায় পড়ে লেনদেন। এরই ধারায় মঙ্গলবার ভাটা পড়ে লেনদেন। ফলে আগের কার্যদিবস থেকে কমে লেনদেন ৫৫৩ কোটি টাকায় এসেছে।চলতি বছরের শুরুতে শেয়ারবাজারের লেনদেন মন্দা ছিল জানিয়ে শাকিল রিজভী সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী তৌহিদুজ্জামান বলেন, ওইসময় সূচকেও ছিল পতন। সময়ে পালাক্রমে শেয়ারবাজার সেই মন্দা লেনদেন থেকে বেড়িয়ে এসেছে। বছরের শুরুর ডিএসইর দেড়শ কোটি টাকার লেনদেন বর্তমানে ৬শ কোটি টাকার কাছাকাছিতে চলে এসেছে।অনেকেই পতন আশঙ্কা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান লেনদেন কেবল শেয়ার বিক্রির কারনে হচ্ছে। এই বিক্রিতে অধিকাংশ কোম্পানির দর কমেছে। সামনে শেয়ারবাজার আরও মন্দা হবে, ভেবে শেয়ার বিক্রিতে ঝুঁকছি। এটা বাজারের জন্য মন্দা বার্তা। কিন্তু করার কিছু নেই। লোকসান থেকে বাঁচতে এ পথে হাঁটছি।স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্র মতে, মঙ্গলবার ডিএসইতে ৫৫৩ কোটি ১৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবস সোমবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৫৮০ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৮৫ দশমিক ৪০ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ৫ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক দশমিক ৮৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ২৩৪ দশমিক ৬৮ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৬৯ দশমিক ৮৫ পয়েন্টে।এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৩৮টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১৪১টি এবং কমেছে ২৯টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ১৬৮টির। এদিন ডিএসইতে জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন জেনেক্স ইনফোসিস ৫৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ৫৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা, শাইনপুকুর সিরামিক ৩৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ৩৪ কোটি ৯ লাখ টাকা, ওরিয়ন ফার্মা ৩১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, সী পার্ল বিচ ২২ কোটি ৭১ লাখ টাকা, ইস্টার্ন হাউজিং ১৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, বসুন্ধরা পেপার ১৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, আমরা নেটওয়ার্ক ১৪ কোটি ২০ লাখ টাকা এবং জেমিনি সী ১৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।অপরদিকে, সিএসইতে মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা শেয়ার। আগের কার্যদিবস সোমবার ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৪০টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ২৫টি, কমেছে ৬০টি এবং পরিবর্তন হয়নি ৫৫টির।এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৫ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৪০ দশমিক ২৪ পয়েন্টে। সিএসই-৩০ সূচক ১১ দশমিক ১৬ পয়েন্ট এবং সিএসসিএক্স সূচক ৩ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৩ হাজার ৩৭৪ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্টে এবং ১১ হাজার ১১৪ দশমিক ৪৫ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক দশমিক ৯০ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক দশমিক ২৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩২৭ দশমিক ১৮ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৬৯ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্টে।এদিন সিএসইতে শাইনপুকুর সিরামিকের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন শাইনপুকুর সিরামিক ১ কোটি ৪১ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সী পার্ল বিচ ৭৬ লাখ টাকা, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ৭৩ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ৩৭ লাখ টাকা, জেনেক্স ইনফোসিস ২৭ লাখ টাকা, বসুন্ধরা পেপার ২৬ লাখ টাকা, আইটিসি ২৫ লাখ টাকা, ইস্টার্ন হাউজিং ১৫ লাখ টাকা, ওরিয়ন ফার্মা ১৫ লাখ টাকা এবং জেএমআই হসপিটাল ১১ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।