ডিএসইর বাজার মূলধনের ৩৬ শতাংশই শীর্ষ দশ কোম্পানির

২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মোট বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭২ হাজার ৭৮ কোটি টাকায়। এর মধ্যে সরকারি ট্রেজারি বন্ডের অংশ ২ লাখ ৫৪ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা বেড়েছে। আর পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বাজার মূলধন ৫ লাখ ১৭ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। এই বাজার মূলধনের ১ লাখ ৮৬ হাজার ২২২ কোটি টাকাই শীর্ষ ১০ কোম্পানির, যা মোট ইক্যুইটির বাজার মূলধনের ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ।গ্রামীণফোন: ৩৮ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা বাজার মূলধন নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে টেলিকম খাতের কোম্পানি গ্রামীণফোন। যদিও কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৩৫০ কোটি ৩ লাখ টাকা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ শেষে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ২২ টাকা ২৯ পয়সা, যা আগের হিসাব বছরে ছিল ২৫ টাকা ২৮ পয়সা। অর্থাৎ বছর ব্যবধানে শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে ২ টাকা ৯৯ পয়সা বা ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন ছিল ৩৮ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, যেখানে আগের অর্থবছর অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন ছিল ৩৯ হাজার ৭১২ কোটি টাকায়। গত এক বছরে ১ হাজার ১২ কোটি টাকার বাজার মূলধন হারিয়েছে গ্রামীণফোন। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারে রিটার্ন কমেছে ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। গ্রামীণফোনের শেয়ার ফ্লোর প্রাইস ২৮৬ টাকা ৬০ পয়সা লেনদেন হচ্ছে।ওয়ালটন: ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের বাজার মূলধন ৩১ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা। এর পরিশোধিত মূলধন ৩০২ কোটি ৯ লাখ টাকা। সর্বশেষ কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে ১ হাজার ৪৭ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে।ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো: ৫৪০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানির বাজার মূলধন ২৮ হাজার ১০ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরের শেষে বিএটিবিসির বাজার মূলধন ছিল ২৯ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বাজার মূলধন কমেছে ১ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ শেয়ারে রিটার্ন কমেছে ৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ। ডিএসইতে ফ্লোর প্রাইসে ৫১৮ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে তাদের শেয়ার।স্কয়ার: স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের পরিশোধিত মূলধন ৮৮৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সদ্যসমাপ্ত অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকায়। অর্থবছরের শুরুতে কোম্পানিটির বাজার মূলধন ছিল ১৯ হাজার ২০৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বাজার মূলধন কমেছে ৬১২ কোটি টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারে রিটার্ন কমেছে ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে ২০৯ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে।রবি: পরিশোধিত মূলধনের দিক থেকে সবচেয়ে বড় কোম্পানি রবি আজিয়াটা লিমিটেডের পরিশোধিত মূলধন ৫ হাজার ২৩৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। কিন্তু ১৫ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা বাজার মূলধন নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন ১৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর আগের অর্থবছরে শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন ছিল ১৪ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বাজার মূলধন কমেছে ১ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারে রিটার্ন কমেছে ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ।রেনেটা: ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন ১৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর আগের অর্থবছরে শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন ছিল ১৪ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বাজার মূলধন কমেছে ১ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারে রিটার্ন কমেছে ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানটির পরিশোধিত মূলধন ১১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। রেনেটার শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস ১ হাজার ২১৭ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে।ইউনাইটেড পাওয়ার: ৫৭৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বাজার মূলধন ১৩ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা। বর্তমানে ফ্লোর প্রাইস ২৩৩ টাকা ৭০ পয়সায় ডিএসইতে লেনদেন হচ্ছে।বেক্সিমকো: বেক্সিমকো লিমিটেডের পরিশোধিত মূলধন ৮৯৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে খাতসংশ্লিষ্ট আরেক কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের বাজার মূলধন ছিল ৬ হাজার ৮৯৭ কোটি টাকা। সদ্যসমাপ্ত অর্থবছর শেষে যা ৬ হাজার ৫২২ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বাজার মূলধন কমেছে ৩৭৫ কোটি টাকা। ডিএসইতে শেয়ারটি ফ্লোর প্রাইস ১১৫ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে।বার্জার পেইন্ট: ৪৬ কোটি ৪০ টাকার পরিশোধিত মূলধনের বার্জার পেইন্ট বাংলাদেশের বাজার মূলধন ৮ হাজার ৫৮ কোটি টাকা। কোম্পানিটির ২০২২ সালের প্রথম ৯ মাসে (এপ্রিল-ডিসেম্বর) শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৪৪ টাকা ১৬ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ৪৩ টাকা ১৮ পয়সা। অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি আয় বেড়েছে ৯৮ পয়সা বা ২ দশমিক ২৬ শতাংশ। এই কোম্পানিটির শেয়ার ফ্লোর প্রাইস ১ হাজার ৭১১ টাকা ৬ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে।লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ: লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ১৬১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৭২ কোটি টাকায়। এর আগের অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন ছিল ৭ হাজার ৯৪৪ কোটি টাকায়। বাজার মূলধন এক বছরের ব্যবধানে ১২৮ কোটি টাকা বেড়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারে রিটার্ন বেড়েছে ১ দশমিক ৬১ শতাংশ। এর শেয়ার ফ্লোর প্রাইসের সামান্য ওপরে ৬৫ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে।