দেশের উন্নয়নে বীমার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: ড. আতিউর রহমান

দেশের উন্নয়নে বীমা কোম্পানি বা বীমার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমরা সেটা সেইভাবে এখনো পর্যন্ত আমাদের চিন্তা-ভাবনায়, নীতিতে উপস্থাপন করে উঠতে পারিনি। এই খাতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কাস্টমার্স কনফিডেন্স। আপনারা যে কাজটি করছেন তার প্রতি আপনাদের গ্রাহকদের আস্থা কতটুকু- সেটা বড় বিষয়। আর্থিক খাতটাতে এ রকম- আস্থা-ই হল বড় কথা বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।বাধবার (০৩ মে) বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স প্রফেশনালস সোসাইটি (বিআইপিএস)’র ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিন এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন একচ্যুয়ারি, বিআইপিএসর দ্বিতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী মো. মোরতুজা আলী, সাধারণ সম্পাদক এ কে এম এহসানুল হক প্রমুখ।ড. আতিউর রহমান বলেন, আপনারা যে কথাটি দিচ্ছেন সেটা কত দ্রুত পরিপালন করছেন। মানুষ কত দ্রুত আপনাদের কাছ থেকে সেই সহায়তাটা পাচ্ছে- এটিই হলো গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংকিং খাতেও তাই। ঋণ অনেকেই নেয় কিন্তু এমডিউসটা কি, সেই ঋণটা কি তারা সত্যি সত্যি ব্যবহার করছে, তারা যে উদ্দেশ্যে নিয়েছে সেই কাজেই কি ব্যবহার করছে। কিংবা সেটা যে সময় ব্যবহার করার কথা ছিল সেই সময় কি সেটা ব্যবহার করেছে। যদি ঠিক মতো ব্যবহার করে, যদি এর থেকে ব্যবসা হয়,যদি এখানে এমপ্লয়মেন্ট হয় সে টাকা ফেরত দিতে তো কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।কিন্তু সেগুলো সঠিকভাবে হয় না। সেই জন্যই নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো অনেক সময় মনিটরিং করেন, জোর দিয়ে তারা সুপারভিশন করেন। কিন্ত রাজনৈতিক অর্থনীতিসহ নানান কারণে সেটা অনেক সময় পেরে উঠে না। এই বাস্তবতায় আমাদের একটি উপায় হলো- পেশাগতভাবে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের নিজেদের পেশাকে আরও পেশাদারী করতে হবে। আমাদের সব আয়োজনকে পেশাদারী করতে হবে।বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর বলেন, বীমা বিষয়ে অনেকের অনুভূমি এমন যে, বীমা নিয়ে বিশেষ করে লাইফ বীমা নিয়ে যখন কথা হয় তখন মৃত্যুর আগে কোন আলাপ-ই হয় না। এই অনুভূতি কেন থাকবে। লাইফ বীমার কাজ অনেকটাই জীবন থাকতেও করা যায়। এর নাম-ই তো জীবন বীমা।তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোতে একটি ইউনিভার্সাল পেনশন স্কিম আসতে যাচ্ছে। সেই স্কিমে ১৮ বছরের পর পর থেকেই আমরা এই স্কিমের আওতায় আনতে চেষ্টা করব। এই স্কিমে হয়তো দুই থেকে আড়াই কোটি মানুষকে সব সময় যুক্ত হবে। কিন্তু এই পেনশন স্কিমের পাশাপাশি যদি তাদেরকে একটি ইনোভেটিভ ইন্স্যুরেন্স প্রোডাক্ট দেয়া যায় এবং এটা সম্ভব।ড. আতিউর রহমান আরও বলেন, এখন মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস আছে, মোবাইল ব্যাংকিং আছে। ডিজিটাল টেকনোলজি যত দ্রুত এখানে বাস্তবায়ন করা যাবে ততটাই দ্রুত বীমার ইনোভেটিভ প্রোডাক্ট তৈরি করা সম্ভব হবে। ব্রড বেজড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের এই সময়ে আমাদের সব কার্যক্রম ডিজিটাল করা সম্ভব।তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভালো কাজগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে কাজ করতে পারে বীমা খাত। একটা সেক্টর থেকে কেন আমরা আরেকটা সেক্টর শিখতে পারব না। বর্তমান সময়ে লিডারশিপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর।