দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ভালো শেয়ার আছে দেশের পুঁজিবাজারে

দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে ভালো মানের শেয়ার রয়েছে জানিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আহ্বান করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ভালো কোম্পানি হিসেবে পরিচিত কোম্পানিগুলো ভালো রিটার্ন দিচ্ছে। এখানে দীর্ঘমেয়াদে ভালো মৌলিক কোম্পানি ও ব্লু চিপসে বিনিয়োগ করা অত্যন্ত লাভজনক হবে।’দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে স্থানীয় সময় গতকাল সকাল ১০টায় ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিট’ শীর্ষক এক সামিটে সভাপতির ব্যক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থেকে সামিটের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সামিটটি সঞ্চালনা করেন এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের (এলআর গ্লোবাল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও রিয়াজ ইসলাম।সামিটে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ আফ্রিকার পাবলিক ওয়ার্কস অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সিহলে জিকালালা এবং বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। এছাড়া অনুষ্ঠানে দক্ষিণ আফ্রিকায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নূর ই হেলাল সাইফুর রহমান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, সাউথ আফ্রিকা বিজনেস ইউনিটের (বিইএসএ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ক্যাস কোভাদিয়া ও ব্ল্যাক বিজনেস কাউন্সিলের (বিবিসি) সিইও কগনকি মাতাবনে বক্তব্য দিয়েছেন।শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন উইন্ডো খোলা হচ্ছে। এখানে বিনিয়োগের বিশাল সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে ইকুইটি, বন্ড (ডেবট) এবং অন্য ডেরিভেটিভগুলোয় বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে। আমরা আমাদের নতুন পণ্য হিসেবে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করতে যাচ্ছি। যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার খনি ও অন্যান্য পণ্যও আগামী বছরগুলোয় ব্যবসা করা যেতে পারে।’তিনি বলেন, ‘কভিড ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় পুঁজিবাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। তবে এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে অস্থিরতা সবচেয়ে কম। আমাদের বাজার মূলধন ১২ বছরের মধ্যে ১ বিলিয়ন থেকে ৭২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। এটি আমাদের পুঁজিবাজারে ১২ বছরের মধ্যে বড় অর্জন। তাই স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, ব্লুমবার্গ, এইচএসবিসি ব্যাংকসহ সবাই বলছে, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা ও সুযোগ রয়েছে।’বৈশ্বিক ব্যবসায়ীদের কাছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ তুলে ধরার লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধারাবাহিকভাবে ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট’ আয়োজন করছে বিএসইসি। এরই ধারাবাহিকতায় দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে এ সামিটের আয়োজন করা হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বিদেশী বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে একটি আকর্ষণীয়, সহজতর ও লাভজনক দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর ব্যবসায়ীদের কাছে তুলে ধরাই এ সামিটের প্রধান আলোচ্য বিষয়।এ সামিটে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিভিন্ন সূচক যেমন উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার, বৃহৎ দেশীয় বাজার, ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড, দক্ষ জনবল, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ও সম্ভাবনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। এছাড়া এতে পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের প্রধান উৎস করার লক্ষ্যে ক্রমাগত উন্নয়নের নিমিত্তে বিএসইসি কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলো উল্লেখ করা হয়।