চলতি মাসেই ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্রে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজের ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে বিএসসি
![চলতি মাসেই ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্রে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজের ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে বিএসসি](https://stocknewsbd.s3.ap-southeast-1.amazonaws.com/5480/banglasram.jpg)
ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার জাহাজের ক্ষতিপূরণ বাবদ ২২.৪৮ মিলিয়ন ডলার পাচ্ছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন-বিএসসি। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসেই ক্ষতিপূরণের অর্থ বিএসসি’র ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা।গত বছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পরিত্যক্ত করা হয় বাংলার সমৃদ্ধি নামের জাহাজটিকে। এরপর নিয়ম অনুযায়ি ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটির ক্ষতিপূরণ বাবদ বীমা কোম্পানির কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করে প্রতিষ্ঠানটি।প্রাইমারি বীমা ইন্স্যুরার বা প্রাথমিক বীমাকারী সংস্থা সাধারন বীমা কর্পোরেশন প্রাথমিক বীমাকারী হিসাবে গত কয়েক মাস যাবত জাহাজটির রিইন্সুরার বা পুনঃবীমাকারী প্রতিষ্ঠান লন্ডন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক বীমা কোম্পানি টাইসারের সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটির বীমা দাবি নিয়ে যোগাযোগ ও আলোচনা চালায়। গত বৃহস্পতিবার (১৬ ফ্রেব্রুয়ারি) টাইসারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে পুনঃবীমাকারী সংস্থাটি এই মাসের মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রায় ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করে।বিএসসি সূত্রে জানা যায়, ডেনমার্কের ডেল্টা কর্পোরেশনের কাছে বাংলার সমৃদ্ধিকে ভাড়া দিয়েছিল শিপিং কর্পোরেশন। এরপর গত বছর ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পৌঁছায় জাহাজটি। ইতালিতে নিজের গন্তব্যে পৌঁছানোর আগে ইউক্রেনের ওই বন্দর থেকে বল ক্লে নেওয়ার কথা ছিল জাহাজটির।কিন্তু ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে ইউক্রেন তার বন্দরগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এরপর ২ মার্চ বন্দরে আটকে থাকা জাহাজটিতে একটি রকেট আঘাত হানে। এতে জাহাজটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং একজন নাবিক নিহত হন।জাহাজের বাকি সদস্যরা পরে জাহাজটিকে অলভিয়া বন্দরে রেখেই নিরাপদে রোমানিয়াতে গিয়ে পৌঁছায়। হামলায় জাহাজের নেভিগেশন ব্রিজ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণ থেকে আগুন ধরে যাওয়ায় জাহাজের অন্যান্য অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।প্রাথমিকভাবে জাহাজটি সাধারন বীমা কর্পোরেশনের মাধ্যমে বীমা করা হয়েছিল এবং লয়েডস অফ লন্ডন ব্রোকার টাইসারের মাধ্যমে পুনঃবীমা করা হয়েছিল।গত বছরের মার্চে শিপিং কর্পোরেশন সাধারন বীমার কাছে বীমা দাবি দাখিল করে তাদেরকে পুনর্বীমাকারী কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ জানায়।যুদ্ধের ঝুঁকির ক্ষেত্রে বীমার নিয়মনীতি উল্লেখ করে বিএসসির শীর্ষ এক কর্মকর্তা জানান, যদি একটি ক্ষতিগ্রস্থ জাহাজকে এক বছরের মধ্যে উদ্ধার করা না যায়, তবে এটিকে কনস্ট্রাকটিভ টোটাল কস্ট বা মোট ক্ষতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়; অর্থাৎ ক্ষতি এতটাই ব্যাপক যে,মেরামত ব্যয় জাহাজের দামের সমান বা এরচেয়েও বেশি অথবা বীমার মূল্যের চেয়ে বেশি।ওই কর্মকর্তার মতে, এসব ক্ষেত্রে পুনর্বীমাকারী প্রতিষ্ঠান জাহাজের সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করে। তিনি জানান, ক্ষতিপূরণের পর জাহাজটি পুনর্বীমাকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে যাবে। পরবর্তীতে জাহাজটি বিক্রি করা হবে এবং সাধারন বীমা ঝুঁকি কভারেজের ১ শতাংশ পাবে।উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের বহরে যুক্ত হয় বাংলার সমৃদ্ধি। চীনের সঙ্গে ঋণ চুক্তির মাধ্যমে ২০৪ কোটি টাকায় জাহাজটি কেনা হয়েছিল।