ছয় মাসে টাকার মান কমেছে ১১.৩ শতাংশ
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশ শক্তভাবে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। তবে এ সময়ে টাকার মান কমেছে ১১ দশমিক ৩ শতাংশ। একই সঙ্গে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ বা এক হাজার ৬৭৫ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলার।ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বেসরকারি খাতের দৃষ্টিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বর) বাংলাদেশের অর্থনীতির সামগ্রিক পর্যালোচনা’ শীর্ষক সেমিনারে বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এসব কথা বলেন সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার মো. সামির সাত্তার। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার।এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের ট্যাক্স-জিডিপির রেশিও ৭ দশমিক ৫ শতাংশ, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) এনবিআরের আয় সংগ্রহ হয়েছে এক লাখ ১৫ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা, যা এর আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৩ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। দেশের বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ ও এফডিআই বাড়ার পেছনে বেশ কিছু বাধা রয়েছে। এর মধ্যে অপর্যাপ্ত অবকাঠামো অন্যতম। একই সঙ্গে ব্যাপক হারে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির প্রভাবও পড়েছে। ওয়ানস্টপ সার্ভিসের অভাব ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার সংস্কারের অভাব রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন ডিসিসিআই প্রেসিডেন্ট।সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। এ ছাড়া বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহসিনা ইয়াসমিন বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। ওষুধশিল্পের জন্য এপিআই শিল্প পার্কের দ্রুত বাস্তবায়ন, হালকা প্রকৌশল শিল্পের জন্য পৃথক শিল্পাঞ্চল এবং পাটপণ্যের বহুমুখীকরণের জন্য নগদ সহায়তার প্রস্তাব করেন। কৃষি খাতের আধুনিকায়ন ও কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণের ওপর আরো বেশি হারে গুরুত্বারোপের পাশাপাশি বিশেষ করে এই খাতে বিনিয়োগ ও রপ্তানি বৃদ্ধিকল্পে কমপক্ষে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দ দেওয়ার আহ্বান জানান ব্যারিস্টার সাত্তার।প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণ নিয়ে আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই, তবে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। বিশেষ করে এলডিসি-পরবর্তী সময়ে রপ্তানি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে হলে ভ্যালু অ্যাডিশনের ওপর আরো বেশি জোর দিতে হবে।’বাণিজ্যসচিব বলেন, এলডিসি-পরবর্তী সময়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সম্ভাবনাময় রপ্তানিমুখী পণ্যের বহুমুখীকরণ একান্ত অপরিহার্য। বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরে সরকারের একক উদ্যোগ যথেষ্ট নয়, এর জন্য প্রয়োজন সরকার ও বেসরকারি খাতের কার্যকর সমন্বয়।সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য ভিয়েতনামের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা থেকে বাংলাদেশের অনেক কিছু শেখার আছে।তিনি বলেন, ‘তৈরি পোশাক ও প্রবাস আয়—দেশের এমন সীমিত অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচক থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। অন্য সম্ভাবনার খাতগুলোর ওপর আরো জোর দিতে হবে।’