বিশেষ সুবিধা চায় স্বল্প মূলধনী দুই কোম্পানি

Date: 2022-10-24 21:00:15
বিশেষ সুবিধা চায় স্বল্প মূলধনী দুই কোম্পানি
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে বিশেষ সুবিধা চেয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত স্বল্প মূলধনী দুই কোম্পানি। কোম্পানি দুটি তাদের পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে বিশেষ সুবিধা চেয়েছে। কোম্পানি দুটি হলো-বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেড এবং পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড।বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানি দুটি বিএসইসির নির্দেশনা মোতাবেক পরিশোধিত মূলধন ন্যুনতম ৩০ কোটি টাকায় উন্নীত করতে রাইট শেয়ার ইস্যু করার পাশাপাশি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একীভূত হওয়ার আবেদন জানিয়েছে।বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার ও পেপার প্রসেসিং সম্প্রতি বিএসইসির কাছে কোম্পানি পৃথক পৃথক আবেদনে বলেছে, রাইট শেয়ার ইস্যুর ক্ষেত্রে তাদের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হওয়ার তিন বছরের শর্ত পূরণ করতে হবে। কিন্তু তারা সে শর্ত পূরণ করতে পারেনি। তাই পরিশোধিত মূলধন ন্যূনতম ৩০ কোটি টাকায় উন্নীত করার লক্ষ্যে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তির তিন বছর হওয়ার শর্ত থেকে তারা অব্যাহতি চেয়েছে।শেয়ারদর উত্থান-পতনের আলোচিত কোম্পানি মনোস্পুল পেপার চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৯ কোটি ৩৮ লাখ থেকে ৩০ কোটি টাকা করার জন্য বিএসইসির কাছ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিএসইসির আদেশ পালনে কোম্পানিটি প্রথম ধাপে ১:১ (১টি শেয়ারের বিপরীতে ১টি রাইট শেয়ার) অনুপাতে রাইট শেয়ার ইস্যু করে পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএসইসির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ঢাকা এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই-সিএসই) কোম্পানিটির শেয়ার পুনঃতালিকাভুক্তির তিন আর্থিক বছর পূর্ণ হওয়ার আগে কোম্পানি রাইট শেয়ার ইস্যু করার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিরূপ প্রভাবের পরেও মনোস্পুল পেপারের ব্যবসা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় রয়েছে। এছাড়া, বিএসইসি নিয়ম এবং নির্দেশাবলী মেনে চলার মাধ্যমে কোম্পানিটি উপকৃত হচ্ছে, যা এর ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটি বিএসইসির উল্লিখিত শর্ত মওকুফের জন্য আবেদন জানিয়েছে, যাতে রাইট শেয়ার ইস্যু করে কোম্পানিটি পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে পারে।চিঠিতে মনোস্পুল পেপার আরও জানিয়েছে, পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকার শর্ত মেনে চলার জন্য কোম্পানিটি প্রথম ধাপে ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৮৮ হাজার ২৫৬ টাকার রাইট শেয়ার ইস্যু করবে। রাইট শেয়ারের অর্থ ব্যাংক ঋণ পরিশোধ এবং ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে ব্যবহার করবে। পরিশোধিত মূলধন ১৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকায় উন্নীত করার পর পার্ল পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলসের সাথে বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি একীভূতকরণের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এতে মনোস্পুল পেপারের পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকা বা তারও বেশি হবে।শেয়ারদর উত্থান-পতনের আরেক আলোচিত কোম্পানি পেপার প্রসেসিং বিএসইসিকে জানিয়েছে, কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা থেকে ৩০ কোটি টাকা করতে প্রথম ধাপে ১:১ (১টি শেয়ারের বিপরীতে ১টি রাইট শেয়ার) অনুপাতে রাইট শেয়ার ইস্যু করবে। কিন্তু বিএসইসির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ডিএসই ও সিএসই তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার পুনঃতালিকাভুক্তীর তিন আর্থিক বছর পূর্ণ হওয়ার আগে কোম্পানি রাইট শেয়ার ইস্যু করতে পারবে না। তাই কোম্পানিটি বিএসইসির উল্লিখিত শর্ত মওকুফের জন্য আবেদন জানিয়েছে।চিঠিতে পেপার প্রসেসিং আরও জানিয়েছে, প্রথম ধাপে রাইট শেয়ার ইস্যু করে কোম্পানিটি ১০ কোটি ৪৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকা সংগ্রহ করবে। রাইট শেয়ারের অর্থ ব্যাংক লোন পরিশোধ এবং ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে ব্যবহার করবে। রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে পরিশোধিত মূলধন ২০ কোটি ৯০ লাখ টাকা হওয়ার পর কোম্পানিটি মাগুরা পেপার মিলসের সঙ্গে একীভূত হবে। এর মাধ্যমে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকায় উন্নীত হবে।পেপার প্রসেসিং ১৯৯০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। পরবর্তীতে ব্যবসায়িক পরিস্থিতি অবনতির কারণে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় কোম্পানিটিকে মূল মার্কেট থেকে ওটিসি মার্কেটে স্থানান্তর করা হয়। প্রায় এক যুগ পর ২০২১ সালের ১৩ জুন কোম্পানিটি মূল মার্কেটে ফিরে আসে।কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ২৫ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ১৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।কোম্পানিটির মোট শেয়ার ১ কোটি ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৬০০টির মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকের কাছে রয়েছে ৩৫ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে শুন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ৬৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ শেয়ার।অন্যদিকে, বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার ১৯৮৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। পরবর্তীতে ব্যবসায়িক পরিস্থিতির অবনতির কারণে কোম্পানিটিকে মূল মার্কেট থেকে ওটিসি মার্কেটে স্থানান্তর করা হয়। প্রায় এক যুগ পর ২০২১ সালের ১৩ জুন কোম্পানিটি মূল মার্কেটে ফিরে আসে।কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ২৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।কোম্পানিটির মোট শেয়ার ৯৩ লাখ ৮৮ হাজার ৮২৫টির মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকের কাছে রয়েছে ৪৫ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে শুন্য দশমিক ৩৫ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ শেয়ার।

Share this news