বিনিয়োগকারীদের ছানাবড়া, দুই কোম্পানির পোয়াবারো

প্রায় দুইশত কোম্পানিকে ফ্লোর প্রাইসে ফেলে রেখে যে কয়টি হাতে গোনা কোম্পানি দর বৃদ্ধির নেতৃত্বে এগিয়ে ছিল, সাম্প্রতিক সময়ে ফুলে ফেঁপে আকাশচুক্তি হওয়া এই দুই কোম্পানি আজ বৃদ্ধির নেতৃত্ব দিয়েছে।আজ লেনদেনের শীর্ষে দশে উঠে আসা ৮ কোম্পানির দর পতন হলেও অবিশ্বাস্যভাবে এই ২ কোম্পানির দরবেড়েছে, যা দেখে বিনিয়োগকারীদের ছানাবড়া কিন্তু ২ কোম্পানির পোয়াবারো। অর্থাৎ আজকের বিশাল পতনের বাজারেও আকাশচুম্বি এই দুই কোম্পানিনেতৃত্বের খাতায় নাম লিখিয়েছে। কোম্পানি দুটি হলো- সোনালী পেপার ও ওরিয়ন ইনফিউশন।বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত তিন মাসে প্রায় দুইশত কোম্পানিকে ফ্লোর প্রাইসে ফেলে রেখে যে কয়টি হাতে গোনা কোম্পানি দর বৃদ্ধির নেতৃত্বে এগিয়ে ছিল তাদের কোনো কোনোটির দর ৮৪ শতাংশ থেকে ৬০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। যা কোনো ক্রমেই একটি ভালো বাজারের ইঙ্গিত বহন করে না।বাজার সংশ্লিষ্টরা আরও বলছেন, একটি কোম্পানির ফান্ডামেন্টাল ভিত্তি যেমন, ইপিএস, পিই রেশিও, সম্পদ মূল্য, ডিভিডেন্ডের ইতিহাস ইত্যাদি দেখে শেয়ার কেনা উচিত।আজকের এই পতনের দিনে এই দুই কোম্পানির তেজিভাব অব্যাহত থাকার কোনো কারণ নেই। একটি গোষ্ঠি কোম্পানি এই দুই কোম্পানিরশেয়ার নিয়ে কারসাজিতে লিপ্ত রয়েছে। কারসাজি চক্রের সঙ্গে কোম্পানির কিছু কর্তাব্যক্তিও জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর আকাশচুম্বী করে এখন নানা গুঞ্জন ছড়ানো হচ্ছে। যাতে কোম্পানিগুলোর শেয়ারে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী হয় এবং চড়া দরে শেয়ারগুলো বিনিয়োগকারীদের হাতে ধরিয়ে দেয়া যায়।এজন্য বাজার সংশ্লিষ্টরা বিনিয়োগকারীদের শেয়ারগুলোর কেনাবেচার সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন।এই দুই কোম্পানির মধ্যে সোনালী পেপার দীর্ঘদিন যাবৎ লেনদেনের শীর্ষদশে প্রায়ই অবস্থান ধরে রাখে। আজও শীর্ষ দশের তৃতীয় স্থান ধরে রেখেছে কোম্পানিটির আজ ১১ লাখ ১০ হাজার ৭২১টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৮১ কোটি ৬৮ লাখ ৯৩ হাজার টাকা।আগেরদিন বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৬৯৯ টাকা ৩০ পয়সা। আজ সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭৩৯ টাকা ৭০ পয়সায়। এই হিসাবে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪০ টাকা বা ৫.৭৭ শতাংশ বেড়েছে।ওটিসি মার্কেট থেকে ২০২০ সালে মূল মার্কেটে ফিরে আসা কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন মূলধন ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ২৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ৪৯৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ২৯ লাখ ৪৫ হাজার ১৯০ টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৬৭.৫১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৭.৮৫ শতাংশ, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৪.৬৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।গত এক মাসের বাজার দর পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ কোম্পনিটির দর ছিল ৬৭৭ টাকা ২০ পয়সা। আর আজ দিন শেষে কোম্পানিটির ক্লোজিং দর হয়েছে ৭৩৯ টাকা ৭০ পয়সায়। এই হিসাবে এক মাসের আগেই কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৬২ টাকা ৫০ পয়সা বা ৯.২২ শতাংশ।আরও পড়ুন:বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলের ডিভিডেন্ড ঘোষণাগত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ার দর সর্বনিম্ন ৪৭০ টাকা আর সর্বোচ্চ ৯৬৫ টাকা ৮০ পয়সায় ওঠা-নামা করেছে।সমাপ্ত অর্থবছরের তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২১-মার্চ’২২) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১৪ টাকা ৭২ পয়সা। যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ৯১ পয়সা।ওরিয়ন ইনফিউশন দীর্ঘদিন যাবৎ লেনদেনের শীর্ষস্থান ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছে এবং প্রায়ই শীর্ষদশে অবস্থান ধরে রাখে। আজও দ্বিতীয় শীর্ষদশের নবম স্থান ধরে রেখেছে। কোম্পানিটির আজ ৩ লাখ ২৮ হাজার ৩৯৫টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২৬ কোটি ৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।আগেরদিন বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৭৫৩ টাকা ৭০ পয়সা। আজ সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮১০ টাকা ২০ পয়সায়। এই হিসাবে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫৬ টাকা ৫০ পয়সা বা ৬.১০ শতাংশ বেড়েছে।১৯৯৪ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন মূলধন ১০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ২০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ২ কোটি ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৭৬০ টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৪০.৬১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৭.৫০ শতাংশ, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫১.৮৫ শতাংশ এবং বিদেশিদের কাছে ০.০৪ শতাংশ শেয়ার রযেছে।গত এক মাসের বাজার দর পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ওরিয়ন ইনফিউশনের দর ছিল ৪০৭ টাকা ২০ পয়সা। আর আজ দিন শেষে কোম্পানিটির ক্লোজিং দর হয়েছে ৮১০ টাকা ২০ পয়সায়। এই হিসাবে এক মাসের আগেই কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৪০৩ টাকা বা ৯৮.৯৬ শতাংশ।গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ার দর সর্বনিম্ন ৭৫ টাকা আর সর্বোচ্চ ৮১০ টাকা ২০ পয়সায় ওঠা-নামা করেছে।সমাপ্ত অর্থবছরের তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২১-মার্চ’২২) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৪৩ পয়সা। যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ১২ পয়সা।সর্বশেষ দর অনুযায়ী কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ৪১৯.৪২ পয়েন্ট।