বিনিয়োগের সামাজিক প্রভাব নিশ্চিত করতে হবে

Date: 2023-11-13 06:00:09
বিনিয়োগের সামাজিক প্রভাব নিশ্চিত করতে হবে
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিনিয়োগ থেকে শুধু মুনাফার চিন্তা করলে হবে না। বিনিয়োগের মাধ্যমে সমাজ ও পরিবেশের ওপর তাদের ইতিবাচক প্রভাব নিশ্চিত করতে হবে। কেননা বিনিয়োগের অবশ্যই একটি সামাজিক গুরুত্ব রয়েছে। রাজধানীতে গতকাল অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ‘ইমপ্যাক্ট ইনভেস্টমেন্ট’ সম্মেলনে বক্তারা এমন মত দেন।বাংলাদেশে ‘ইমপ্যাক্ট ইনভেস্টমেন্ট’ বা বিনিয়োগের মাধ্যমে সামাজিক প্রভাববিষয়ক ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি বোর্ড (এনএবি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) কার্যালয়ে এ সম্মেলনের আয়োজন করে। এনএবির পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এ সম্মেলনের আয়োজন করে ১০ নভেম্বর ‘ন্যাশনাল ইমপ্যাক্ট ইনভেস্ট দিবস’ আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।সম্মেলনে এনএবি ট্রাস্টের চেয়ার আরাস্তু খান বলেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো যত বেশি সম্ভব মুনাফা অর্জনের চেষ্টা করে এবং তার জন্য ঝুঁকি নেয়। এখন সময় এসেছে মুনাফা করার পাশাপাশি ব্যবসার মাধ্যমে সামাজিক প্রভাব তৈরির। এনএবির কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন তিনি।এনএবির চেয়ার এবং বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, বিনিয়োগ-সংক্রান্ত নীতিকৌশল উন্নয়ন এবং সহায়ক সেবার মান উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশ এখন আকর্ষণীয় গন্তব্য। বিভিন্ন সেবার তথ্য তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, মূলধনী যন্ত্র আমদানিতে নামমাত্র আমদানি শুল্ক এবং রপ্তানিমুখী শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধায় এ দেশে বিনিয়োগ লাভজনক। অন্যান্য সুবিধা প্রসঙ্গে লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, ভৌগোলিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানের ফলে বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্য চীন, ভারতসহ উদীয়মান এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সহজে রপ্তানি করা সম্ভব। এ ছাড়া ১৭ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারও বেশ বড়। বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এসব সুবিধা নিতে বিদেশি উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।সম্মেলনে এনএবির জাতীয় উপদেষ্টা বোর্ডের প্রধান নির্বাহী স্থপতি ফরহাদুর রেজা প্রবাল বলেন, উদ্ভাবনী বিনিয়োগের মাধ্যমে মূলধারার বিনিয়োগকে পরিবেশ সহায়ক করার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে আসছেন তারা, যা টেকসই সামাজিক উন্নয়নকে নিশ্চিত করবে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে মুনাফার চিন্তার পাশাপাশি বিনিয়োগের মাধ্যমে সমাজ এবং পরিবেশের ওপর ইতিবাচক প্রভাব নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, মূলত জলবায়ুর পরিবর্তনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে উদ্ভাবনী বিনিয়োগ পরিকল্পনাকেই উৎসাহিত করতে চান তারা।সম্মেলনে তিনটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এসব আলোচনায় বক্তারা বিনিয়োগ পরিস্থিতির ধারাবাহিক মনিটরিংয়ের কথা বলেন। দক্ষ মানবসম্পদ এবং প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্তের ওপর জোর দেন তারা। আর্থিক মুনাফার পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়নে সহায়ক এবং উদ্ভাবনী বিনিয়োগ প্রস্তাবে পুঁজির জোগানের বিষয়েও গুরুত্ব দেন তারা। শিল্প পণ্য মোড়কীকরণে পরিবেশ সহায়ক পলিথিন ব্যবহারের উদ্ভাবনী একটি প্রস্তাবনা উপস্থাপনা করা হয়। পরিবেশ সুরক্ষা এবং শিল্পের মুনাফা প্রসঙ্গে প্রস্তাবের ওপর সংক্ষিপ্ত একটি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।সম্মেলনে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন খাতের প্রতিনিধি, উন্নয়ন অংশীদার, শিক্ষাবিদ ও গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।

Share this news