বিনিয়োগকারীদের দুশ্চিন্তায় ফেলেছে ৬ কোম্পানি
![বিনিয়োগকারীদের দুশ্চিন্তায় ফেলেছে ৬ কোম্পানি](https://stocknewsbd.s3.ap-southeast-1.amazonaws.com/6877/sharee...png)
বিদায়ী সপ্তাহশেষে (০৯-১৩ এপ্রিল) বিনিয়োগকারীদের দুশ্চিন্তায় ফেলেছে ৬ কোম্পানির শেয়ার। সপ্তাহের ব্যবধানে বহু কোম্পানির শেয়ারদর ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় থাকলেও ‘এ’ ক্যাটাগরির এই ৬ কোম্পানির শেয়ার দরে ছিল বড় পতন। অথচ কোম্পানিগুলোর শেয়ার পতনের কোনো কারণ ছিল না। কোম্পানিগুলো হলো-মুন্নু এগ্রো, রহিম টেক্সটাইল, এডিএন টেলিকম, বিডি ল্যাম্প, ঢাকা ইন্সুরেন্স ও রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।বিনিয়োগকারীরা বলছেন, গেল সপ্তাহে ডিভিডেন্ড না দেয়া এবং লোকসানি বহু কোম্পানির শেয়ার দরে ছিল অনেক তেজিভাব। অথচ ভালো ডিভিডেন্ড ও ঊর্ধ্বমুখী মুনাফার ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ারগুলোতে ছিল পতন প্রবণতা। বেশি দরে শেয়ারগুলো কিনে তারা এখন বড় লোকসানের মুখে পড়েছেন।কোম্পানিগুলোর মধ্যে মুন্নু এগ্রোর শেয়ারদর কমেছে ১২.১৭ শতাংশ, রহিম টেক্সটাইলের ১১.৬৩ শতাংশ, এডিএন টেলিকমের ৮.৫৬ শতাংশ, বিডি ল্যাম্পের ৮.৪৪ শতাংশ, ঢাকা ইন্সুরেন্সের ৭.০২ এবং রংপুর ফাউন্ড্রির ৬.৯৭ শতাংশ দর কমেছে।বিনিয়োগকারীরা বলছেন, সপ্তাহের শুরুতে বাজার নেতিবাচক থাকলেও শেষ কর্মদিবসে বাজার বেশ ইতিবাচক ছিল। যার ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার কিছুটা হলেও ইতিবাচক প্রবণতায় ছিল। আলোচ্য সপ্তাহে অনেক দুর্বল ও লোকসানি কোম্পানির শেয়ার দরে ছিল বড় উল্লম্ফন।অথচ ডিভিডেন্ড দেয়া ভালো কোম্পানিগুলোর শেয়ার দরে ছিল নেতিবাচক প্রবণতা। ‘এ’ গ্রুপের আলোচ্য ৬ কোম্পানির শেয়ার দরেও ছিল বেশি নেতিবাচক প্রবণতা। কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর কমেছে বিনা কারণে।তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবেচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে রয়েছেন মুন্নু এগ্রোর বিনিয়োগকারীরা। গত বছরের অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে শেয়ারটির দর ৫০০ টাকার নিচে ছিল। তারপর থেকে ধারাবাহিক উত্থান। পাঁচ মাসের ধারাবাহিক উত্থানে গত ০১ মার্চ ১১০০ টাকায় লেনদেন হয়েছিল। তারপর থেকে ধারাবাহিক পতন। প্রতি সপ্তাহেই শেয়ারটির দর কমছে। সর্বশেষ শেয়ারটি ৮১৯ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। এতে দেখা যায়, দেড় মাসের কম সময়ের ব্যবধানে শেয়ারটির দর কমেছে ২৮১ টাকার বেশি বা ২৫.৫৪ শতাংশের বেশি। গেল সপ্তাহেই দর কমেছে ১২.১৭ শতাংশ। বাজারে গুঞ্জন রয়েছে, কোম্পানিটি মূলধন বৃদ্ধির জন্য রাইট শেয়ার ইস্যু করবে। স্বল্প মূলধনী কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০২২ সালে বিনিয়োগকারীদের ১৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। বর্তমানে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ২ কোটি ৭৩ লাখ ২৪ হাজার টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ৪৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা। যা মূলধনের ১৬ গুণের বেশি। এটি শেয়ারবাজারে অন্যতম বেশি রিজার্ভের কোম্পানি। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই’২২-মার্চ’২৩) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১ টাকা ৩৬ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৮৫ পয়সা।গেল সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের দুশ্চিন্তায় ফেলার দ্বিতীয় কোম্পানি ছিল রহিম টেক্সটাইল। গত বছর ডিসেম্বর মাসে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ২১৫ টাকার ওপরে। তারপর থেকেই ধারাবাহিক পতন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শেয়ারটির দর ১৩৮ টাকায় নেমে আসে। তারপর কিছুটা ওপরে উঠে ১৬০ টাকায় লেনদেন হলেও আবার পতন হয়। সর্বশেষ শেয়ারটি ১৪১ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। স্বল্প মূলধনী কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০২২ সালে বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। বর্তমানে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ২৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। যা মূলধনের ২.৭৯ গুণের বেশি। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই’২২-মার্চ’২৩) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪ টাকা ৭১ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ১ টাকা ৪৬ পয়সা।সপ্তাহের ব্যবধানে তৃতীয় পতনের কোম্পানি ছিল এডিএন টেলিকম। গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৬০ টাকার নিচে। তারপর ধারাবাহিক উত্থান হয়ে এই বছরের ৯ মার্চ ১৬৬ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়। তারপর থেকে সংশোধনে ফিরে শেয়ারটি। গেল বৃহস্পতিবার শেয়ারটি ১৩৬ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়। সর্বশেষ কোম্পানিটি ২০২২ সালে বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। বর্তমানে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ৬৪ কোটি ৬৫ লাখ ১৬ হাজার টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ৭২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই’২২-মার্চ’২৩) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ২ টাকা ০১ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ২৩ পয়সা।একইভাবে সপ্তাহের ব্যবধানে বিডি ল্যাম্প, ঢাকা ইন্সুরেন্স ও রংপুর ফাউন্ডিরও শেয়ারদর কমেছে। তবে কোম্পানি ৩টির দর আগের সপ্তাহে বেড়েছিল বলে বিদায়ী সপ্তাহে সংশোধন হয়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানি ৩টির বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তোলাতে বিদায়ী সপ্তাহে শেয়ারগুলোর দর সংশোধন হয়েছে।