বিক্রি কমেছে তালিকাভুক্ত চামড়া খাতের অধিকাংশ কোম্পানির

Date: 2023-02-10 16:00:14
বিক্রি কমেছে তালিকাভুক্ত চামড়া খাতের অধিকাংশ কোম্পানির
চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) ব্যবসায়িকভাবে ভালো যায়নি দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চামড়া খাতের অধিকাংশ কোম্পানির। এ সময়ে বড় কোম্পানি ভালো ব্যবসা করলেও ছোট কোম্পানিগুলোর বিক্রি নেমেছে তলানিতে। এমনকি বিভিন্ন ধরনের ব্যয় বৃদ্ধির চাপে লোকসানও গুনতে হয়েছে ছোট কোম্পানিগুলোর। দেশের পুঁজিবাজারে চামড়া খাতের ছয়টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। সেগুলো হলো এপেক্স ট্যানারি লিমিটেড, এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড, বাটা সু কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড, ফরচুন সুজ লিমিটেড, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার লিমিটেড ও সমতা লেদার কমপ্লেক্স লিমিটেড। এর মধ্যে বাটা সুর হিসাব বছর গণনা করা হয় জানুয়ারি-ডিসেম্বর সময়ে। কোম্পানিটি এখনো ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। এছাড়া জুলাই-জুন সময়ে হিসাব বছর গণনা করা সমতা লেদার কমপ্লেক্স দ্বিতীয় প্রান্তিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর) প্রকাশ-সংক্রান্ত পর্ষদ সভার তারিখ নির্ধারণ করেনি। চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে এপেক্স ট্যানারির বিক্রি হয়েছে ৩৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি ছিল ৬২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির বিক্রি কমেছে ৩৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। বিক্রি কমার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যয় বৃদ্ধির চাপে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটিকে লোকসান গুনতে হয়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছিল ২৪ লাখ টাকা। আর সর্বশেষ দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির বিক্রি হয়েছে ১৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বিক্রি ৫৮ দশমিক ২৬ শতাংশ কম। আগের হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির বিক্রি হয়েছিল ৩৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। সর্বশেষ দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এর আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যেখানে নিট মুনাফা হয়েছিল ১১ লাখ টাকা। লোকসান হওয়ার কারণ হিসেবে এপেক্স ট্যানারি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আলোচ্য সময়ে তাদের বিক্রি কমে গিয়েছে। এর পাশাপাশি রাসায়নিক খরচ বৃদ্ধি ও পণ্য বিক্রির জন্য প্রচারণামূলক ব্যয় বেড়েছে। এসব কারণে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটিকে লোকসান গুনতে হয়েছে। তালিকাভুক্ত চামড়া খাতের আরেক কোম্পানি এপেক্স ফুটওয়্যারের চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে বিক্রি হয়েছে ৮০১ কোটি ৬ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৫৬৬ কোটি ৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে ৪১ দশমিক ৫১ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ৪১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। তালিকাভুক্ত চামড়া খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে আলোচ্য সময়ে কেবল এই একটির কোম্পানিরই বিক্রি বেড়েছে। এর কারণ হিসেবে কোম্পানিটি জানিয়েছে, আলোচ্য সময়ে তাদের পণ্য লোকাল বাজারের পাশাপাশি বিদেশেও ভালো বিক্রি হয়েছে। চলতি হিসাব বছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে চামড়া খাতের আরেক কোম্পানি ফরচুন সুজের বিক্রি হয়েছে ৯৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ বিক্রি ছিল ৯৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বিক্রি কমেছে ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে এ মুনাফা হয়েছিল ৩২ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে ৩৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। তালিকাভুক্ত চামড়া খাতের আরেক কোম্পানি লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে বিক্রি হয়েছে মাত্র ৯ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি ছিল ৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির বিক্রি কমেছে ৯৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ। বিক্রি কমার পাশাপাশি বিভিন্ন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটিকে লোকসান গুনতে হয়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যেখানে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছিল ১৪ লাখ টাকা।

Share this news