বিএসইসির নজরদারিতে জেমিনি সী ফুড
![বিএসইসির নজরদারিতে জেমিনি সী ফুড](https://stocknewsbd.s3.ap-southeast-1.amazonaws.com/6676/gemini-340x175.jpg)
মূল্য সংবেদনশীল কোনো তথ্য ছাড়াই লাগামহীনভাবে দর বাড়ছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আলোচিত কোম্পানি জেমিনি সী ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ারদর লাগামহীনভাবে বাড়ায় প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কোম্পানিটির শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে একাধিকবার। শেয়ারটির অস্বাভাবিক শেয়ারদর বৃদ্ধির কারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নজরেও রয়েছে।এই বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম শেয়ারনিউজকে বলেন, জেমিনি সী ফুডের শেয়ারদর যেভাবে বাড়ছে, তা সন্দেহজনক। আমরা বিষয়টি নজরদারিতে রেখেছি। কারসাজির কোনো প্রমাণ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।তিনি বলেন, কারসাজিতে কেউ জড়িত থাকলে, বাজারের স্বার্থে কাউকে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। বিএসইসি এই বিষয়ে তৎপর বলে জানান তিনি।তবে বাজারে গুঞ্জন রয়েছে কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে যারা কারসাজি করছে, তাদের অন্যতম সহযোগি ইকবাল হুজুর নামের এক ব্যাক্তি। তিনি কোম্পানিটির শেয়ারদর এক হাজার টাকা পর্যন্ত উঠাতে চায়। এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে লেখালেখিও।বিষয়টি নিয়ে ইকবাল হুজুরের সাথে কথা বলে শেয়ারনিউজ। ইকবাল হুজুর শেয়ারনিউজকে বলেন, স্বাভাবিক নিয়মেই তিনি জেমিনি সী ফুডের শেয়ার কেনা বেচা করছেন। কারসাজির বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ০২ জানুয়ারি কোম্পানিটির শেয়ারের দর ছিল ৩৪১ টাকা ৭০ পয়সা। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (০৬ এপ্রিল) কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১৪ টাকা ৮০ পয়সায়। অর্থাৎ তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৩৭৩ টাকা ১০ পয়সা বা ১০৯ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে গেল সপ্তাহে ডিএসই দুইবার সতর্কতা জারি করেছে।সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ি, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই প্রান্তিকে বা ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর’২২) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭ টাকা ১০ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ৩ টাকা ৯৪ পয়সা। হঠাৎ কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনে এমন বড় পরিবর্তনও সন্দেহজনক বলে মনে করছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। এই বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাও একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে আর্থিক প্রতিবেদন খতিয়ে দেখছে।সর্বশেষ ২০২২ সালে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ ক্যাশ এবং ৩০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে। বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী মূলধন বৃদ্ধির লক্ষ্যেই ৩০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। তার আগের বছর ২০২১ সালে ৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। এর আগে অনেক বছর কোম্পানিটির ‘নো ডিভিডেন্ড’ দেওয়ার রেকর্ড রয়েছে।সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ি, কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ১৮ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১০ টাকা ০৭ পয়সা।কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ৬ কোটি ১০ লাখ টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে মাত্র ৫০ লাখ টাকা। অর্থাৎ ধারে-কর্জে চলছে কোম্পানিটির কার্যক্রম। অথচ কোম্পানিটির শেয়ার দরে চলছে তেলেসমাতি। বর্তমানে কোম্পানিটির দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ রয়েছে ৬৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।