বাণিজ্যিক উৎপাদনে এনভয়ের সম্প্রসারিত স্পিনিং ইউনিট
![বাণিজ্যিক উৎপাদনে এনভয়ের সম্প্রসারিত স্পিনিং ইউনিট](https://stocknewsbd.s3.ap-southeast-1.amazonaws.com/6502/news_336373_1.jpg)
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি এনভয় টেক্সটাইলস লিমিটেডের সম্প্রসারিত স্পিনিং ইউনিটে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে। এ মাসের শুরু থেকেই ইউনিটটিতে বর্ধিত সক্ষমতায় উৎপাদন চলছে। নতুন এ ইউনিট চালু হওয়ায় কোম্পানিটির বার্ষিক ইয়ার্ন উৎপাদন সক্ষমতা ৪ হাজার ২০০ টন বাড়বে। গতকাল স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে কোম্পানিটি।তথ্যানুসারে, ময়মনসিংহের ভালুকার জমিরদিয়ায় অবস্থিত এনভয় টেক্সটাইলসের বিদ্যমান স্পিনিং ইউনিটের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরবরাহকারীর কাছ থেকে যন্ত্রপাতি পেতে দেরি হওয়ার কারণে সম্প্রসারিত ইউনিটটি চালু করতে কিছুটা দেরি হয়েছে। করোনার মধ্যেই ২০২১ সালের ১৫ জুলাই স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে স্পিনিং ইউনিটের সক্ষমতা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল এনভয় টেক্সটাইলস। এতে ১৭৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ করার কথা জানায় কোম্পানিটি। এর মধ্যে ৫৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা কোম্পানির সংরক্ষিত আয় থেকে এবং বাকি ১২০ কোটি টাকা ব্যাংকঋণের মাধ্যমে জোগান দেয়া হয়েছে। সম্প্রসারিত ইউনিট থেকে উৎপাদিত ইয়ার্নের অধিকাংশ এনভয় টেক্সটাইলস নিজেই ডেনিম উৎপাদনে ব্যবহার করবে। পাশাপাশি প্রচ্ছন্ন রফতানির জন্যও কিছু ইয়ার্ন সরবরাহ করা হবে। সাত বছরের মধ্যে এ প্রকল্পে বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত আসবে বলে প্রত্যাশা করছে কোম্পানিটি।এদিকে এনভয় টেক্সটাইলস লিমিটেড তাদের দ্বিতীয় স্পিনিং ইউনিট (ব্লেন্ডেড ইয়ার্ন প্রকল্প) স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করেছে। এ প্রকল্পের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে ১ কোটি ৮ লাখ ইউরো দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নিয়েছে কোম্পানিটি। এডিবির ঋণের অর্থে এনভয় টেক্সটাইলসের দ্বিতীয় স্পিনিং ইউনিটের জন্য যন্ত্রপাতি ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য সরঞ্জাম কেনা হবে। দেড় বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণের মেয়াদ সাত বছর। গ্রেস পিরিয়ডের পর থেকে অর্ধবার্ষিক ভিত্তিতে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। এনভয় টেক্সটাইলসের নতুন ইউনিটটি আরো বেশি জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং এর বার্ষিক ৩ হাজার ৬০০ টন ডেনিম ফেব্রিকস উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। ইউনিটটিতে নতুন করে ২৫০ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) এনভয় টেক্সটাইলসের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) আয় হয়েছে ২ টাকা ১২, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৫৮ পয়সা। গত বছরের ৩১ মার্চ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৯ টাকা ৪০ পয়সায়।৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরে ৫ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে এনভয় টেক্সটাইলস। এছাড়া সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য ৫ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি। সেই হিসাবে আলোচ্য হিসাব বছরের জন্য মোট ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৫৬ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১ টাকা ৬৩ পয়সা।রফতানিমুখী পরিবেশবান্ধব এনভয় টেক্সটাইলস ২০১২ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৪০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ১৬৭ কোটি ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৩৫৪ কোটি ১২ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১৬ কোটি ৭৭ লাখ ৩৪ হাজার ৭৬৭। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৫৭ দশমিক ৯৩, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৪ দশমিক ৮১, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক শূন্য ৭ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে বাকি ৭ দশমিক ১৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল এনভয় টেক্সটাইলসের শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর ছিল ৪৩ টাকা ৯০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ৩৯ টাকা ৯০ ও ৫১ টাকা ৯০ পয়সা।