আট খাতের কোম্পানির লভ্যাংশ পাওয়া নিয়ে শঙ্কা

দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ খাতের কোম্পানির আয় সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। মূলত দেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাবেই কোম্পানিগুলোর আয়ে ভাটা পড়েছে। এদিকে কোম্পানিগুলোর আয় কমে যাওয়ার কারণে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশিত হারে ডিভিডেন্ড ইল্ড পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ক্যাপিটালের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।দেশের পুঁজিবাজারে বর্তমানে ১৮টি খাতের কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বীমা খাতের কোম্পানিগুলোর হিসাব বছর শেষ হয় ডিসেম্বরে। আর বাকি ১৫ খাতের কোম্পানিগুলোর হিসাব বছর শেষ হয় জুনে। এরই মধ্যে জুন ক্লোজিংয়ের কোম্পানিগুলোর প্রথম তিন প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। সামনে কোম্পানিগুলোর বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ ও বিনিয়োগকারীদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করা হবে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ক্যাপিটালের প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিক শেষে আটটি খাতের কোম্পানির আয় আগের হিসাব বছরের তুলনায় কমেছে। খাতগুলো হচ্ছে সিমেন্ট, সিরামিকস, প্রকৌশল, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বিবিধ, ওষুধ ও রসায়ন, চামড়া ও বস্ত্র খাত। অন্যদিকে এ সময়ে যেসব খাতের কোম্পানির আয় বেড়েছে সেগুলো হচ্ছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, তথ্যপ্রযুক্তি, পাট, কাগজ ও মুদ্রণ, সেবা ও আবাসন, টেলিযোগাযোগ এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাত।প্রতিবেদনে ২০২২ হিসাব বছরে কোন খাতের কোম্পানিগুলো কী হারে লভ্যাংশ দিয়েছে সেটি তুলে ধরা হয়েছে। ব্যাংক ও টেলিযোগাযোগ খাতের ডিভিডেন্ড ইল্ড ছিল ৪ শতাংশের বেশি। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের প্রায় সাড়ে ৩ শতাংশ, সেবা ও আবাসন খাতের ৩ শতাংশের বেশি, বীমা খাতের প্রায় আড়াই শতাংশ এবং সিমেন্ট ও বস্ত্র খাতের ছিল ২ শতাংশ। ১ শতাংশ বা তার বেশি ডিভিডেন্ড ইল্ড এসেছে যেসব খাতে সেগুলো হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, প্রকৌশল, বিবিধ, চামড়া, ওষুধ ও রসায়ন, সিরামিকস এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাত। ১ শতাংশেরও কম ডিভিডেন্ড ইল্ড এসেছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, কাগজ ও মুদ্রণ এবং পাট খাতের শেয়ারে। এসব খাতের শেয়ারে বিনিয়োগকারী হয়তো গতবারের মতোই ডিভিডেন্ড ইল্ড প্রত্যাশা করছেন। কিন্তু সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরের প্রথম নয় মাসে কোম্পানিগুলোর আয় কমে যাওয়ার কারণে তাদের এ প্রত্যাশা পূরণ নাও হতে পারে।ডিভিডেন্ড ইল্ড হচ্ছে একটি আর্থিক অনুপাত, যা শতাংশে প্রকাশ করা হয়। এর মাধ্যমে একটি কোম্পানি এর বিনিয়োগকারীদের প্রকৃতপক্ষে কী পরিমাণ লভ্যাংশ দেয় তা বোঝা যায়। শেয়ারপ্রতি প্রদত্ত বার্ষিক লভ্যাংশকে প্রতি শেয়ারের দর দিয়ে ভাগ করে ডিভিডেন্ড ইল্ড নির্ণয় করা হয়। ধরা যাক একটি কোম্পানির শেয়ারদর ১০০ টাকা এবং সেটি প্রতি শেয়ারে ১০ টাকা করে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। সেক্ষেত্রে এ কোম্পানির ডিভিডেন্ড ইল্ড হবে ১০ শতাংশ। শেয়ারদরের ওঠানামার সঙ্গে ডিভিডেন্ড ইল্ড পরিবর্তন হতে পারে। কোম্পানির শেয়ারদর কমলে এর ডিভিডেন্ড ইল্ড বেড়ে যাবে। অন্যদিকে শেয়ারদর বাড়লে ডিভিডেন্ড ইল্ড কমবে।