আইসিবির আমানত পেতে অপেক্ষা করতে হবে বিনিয়োগকারীদের
![আইসিবির আমানত পেতে অপেক্ষা করতে হবে বিনিয়োগকারীদের](https://stocknewsbd.s3.ap-southeast-1.amazonaws.com/6482/icb.jpg)
গত এক বছর ধরে দেশের শেয়ারবাজার পতনমুখী। যেহেতু আইসিবির মূল বিনিয়োগ শেয়ারবাজারে। তাই বাজার মন্দা থাকার কারণে শেয়ারবাজার থেকে মুনাফা করতে ব্যর্থ হয়েছে আগের বছরের তুলোনায়। ফলে আমানত রাখার একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান হয়েও আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে গভীর সমস্যার মধ্যে পড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটি।জানা গেছে, আইসিবিতে ৮৪ কোটি টাকা মেয়াদি আমানত রাখার পর সম্প্রতি মেয়াদ শেষে নগদায়নের অনুরোধ করে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড। কিন্তু, আইসিবি দিতে পেরেছে মাত্র ৬৭.৬৯ কোটি টাকা। আমানতের বাকি টাকা অংশ ফেরত পেতে কয়েক দফা চিঠি পাঠানোর পরও কোন কাজ না হওয়ায়, গ্যাস কোম্পানিটি বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ চেয়েছে।কোম্পানিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আইসিবির কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি পাঠালে জবাবে আইসিবি বলেছে, শেয়ারবাজারে পর্যাপ্ত ক্রেতা না থাকায় শেয়ার বিক্রি করে অর্থ উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না। শেয়ারবাজার পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরলে প্রাপ্য অর্থ ফেরত দেওয়া সম্ভব হবে।গত ২৩ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংককে লেখা চিঠিতে আইসিবি ক্রেতার অভাবের জন্য বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও মন্দাকে দায়ী করেছে। এর আগে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানির আমানতের টাকা ফেরত দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক চিঠি দিলে গত ফেব্রুয়ারিতেও একই কথা বলেছিল আইসিবি।বিনিয়োগ পাওয়ার চেষ্টাআইসিবির সূত্রে জানা গেছে, শেয়ারবাজারে ক্রেতার অভাবে শেয়ার বিক্রি করতে না পারায় আমানত মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর আমানতকারীদের কাছে তাদের বিনিয়োগ নবায়নের অনুরোধ করছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আইসিবি।শয়ারবাজারের মন্দা পরিস্থিতির কারণে আরও কিছু কোম্পানির আমানতের মূল অর্থ ফেরত না দিয়ে ডিভিডেন্ড পরিশোধ করে মূল অর্থ পুনঃবিনিয়োগের অনুরোধ করেছেন। পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানিকেও একই প্রস্তাব দেওয়া হয়, কিন্তু তারা এটি প্রত্যাখ্যান করেবলে জানিয়েছেন আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেন।তিনি আরও বলেন, আইসিবি চাইলে আজকেই শেয়ার বিক্রি করে টাকা দিয়ে দিতে পারব। কিন্তু আইসিবি শেয়ার বিক্রি করলেও যেন বাজারে নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে, সেজন্যই তাদের অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে।এই বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী বলেন, আইসিবিতে আমাদের কিছু টাকা আটকে আছে। আমানতের বড় অংশই তারা ফেরত দিয়েছে। এই মুহূর্তে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা নেই।বর্তমানে আইসিবির কাছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মোট প্রায় ৯ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকার মেয়াদি আমানত রয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংক ও নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত ৫ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা।আইসিবির আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতের মধ্যে রাষ্টায়ত্ত সোলানী, জনতা, অগ্রণী, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের মেয়াদি আমানত রয়েছে ৩,৫৪৬ কোটি টাকা। অবশিষ্ট আমানত নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের।সর্বশেষ তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর প্রান্তিকে আইসিবির নিট মুনাফা হয়েছে ৪৬.৫ কোটি টাকা। আগের বছর একই সময়ে মুনাফা ছিল ১৪০ কোটি টাকা।শেয়ারের দাম কমে যাওয়া ও ফ্লোর প্রাইসের কারণে পুঁজিবাজার ক্রেতাশুন্য হয়ে পড়ছে। ফলে শেয়ার বিক্রি করতে পারছে না সংস্থাটি। এতে ক্যাপিটাল গেইন থেকে আইসিবির আয় কমে গেছে। আবার মন্দা বাজারে আইসিবি শেয়ার বিক্রি শুরু করলে– পুঁজিবাজার পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে ক্যাপিটাল গেইনও কমে গেঠে সংস্থাটির।