আগামী বাজেটে জুয়েলারি খাতে আরোপিত শুল্ক কমানোর প্রস্তাব বাজুসের

বিশ্ববাজারে বাংলাদেশকে সোনার বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে জুয়েলারি খাতে আরোপিত শুল্ক হার কমানো ও আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।আজ বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রণয়নে বাজুস এই প্রস্তাব দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর)।বাজুসের প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর স্বাক্ষরিত এই প্রস্তাবনায় বলা হয়, জুয়েলারি এদেশের প্রাচীন শিল্পের মধ্যে অন্যতম। সম্ভাবনাময়ী জুয়েলারি শিল্পের বাজার দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে।জুয়েলারি শিল্প বিশ্ব দরবারে তৈরি পোশাক শিল্পের পাশাপাশি রপ্তানি আয়ের একটি বড় খাত হিসেবে পরিচিতি পেতে যাচ্ছে।বর্তমানে স্থানীয় বাজারে সোনার বার্ষিক চাহিদা ২০ থেকে ৪০ মেট্রিক টন। বৈধভাবে এই চাহিদা পূরণ এবং জুয়েলারি ব্যবসাকে শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে বড় বাধা কাঁচামালের উচ্চ মূল্য, অতিরিক্ত উত্পাদন ব্যয়, শিল্প সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতির উচ্চ আমদানি শুল্ক ও উচ্চ বিনিয়োগ। এ ছাড়া এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় সকল ধরনের পণ্য ও যন্ত্রপাতির শুল্ক ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ।যা স্থানীয় অন্যান্য শিল্পে আরোপিত শুল্কের চেয়ে অনেক বেশি। যার কারণে বড় বিনিয়োগ বাধাগ্রন্থ হচ্ছে। পাশাপাশি এই শিল্পের উত্পাদন ব্যয় বেশি হওয়ার কারণে ভোক্তা পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে দামের পার্থক্য প্রায় ১০ হাজার টাকা হয়ে যায়। আবার এর সঙ্গে যোগ হয় ৫ শতাংশ মূসক।ফলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ভোক্তা সাধারণের ওপর।বাজুসের প্রস্তাবনায় আরো বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে এই সর্ব প্রথম সোনা পরিশোধনাগার স্থাপন হয়েছে। বিশ্ব বাজারে আর কিছুদিন পর রপ্তানি হবে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ সম্বলিত সোনার বার। যা এ দেশের জুয়েলারি শিল্প সম্প্রসারণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। কিন্তু এই পরিশোধনাগার স্থাপনে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতির আমদানি শুল্ক অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ার কারণে প্রাথমিক পর্যায়ে উত্পাদন ব্যয় অনেক বেড়ে যাচ্ছে।ফলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে জুয়েলারি শিল্পের ওপর।প্রস্তাবনায় আরো বলা হয়, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশকে সোনার বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই খাতে আরোপিত শুল্ক হার কমানো ও আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করলে সরকারের রাজস্ব খাতে শুধু নতুন খাতই যুক্ত হবে না, বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের আরেকটি খাতও তৈরি হবে। এই অবস্থায় মুক্ত বাজার অর্থনীতির যুগে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা, সোনার অলংকার রপ্তানির সক্ষমতা তৈরি, নতুন শিল্প কারখানা স্থাপন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সর্বোপরি সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাজুসের প্রস্তাবনা সমূহ ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অনুরোধ জানানো হয় এই প্রস্তাবনায়।