৯ মাস কারখানা বন্ধ, তারপরও মুনাফায় অস্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আলোচিত কোম্পানি বাংলাদেশ পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের কারখানা প্রায় ৯ মাস যাবৎ বন্ধ। তারপরও কোম্পানীটির রেভেনিউ ও মুনাফায় অস্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে।মাগুরা গ্রুপের এই অঙ্গপ্রতিষ্ঠানটির কারখানাটি মূলত ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও বৈশ্বিক মন্দার মধ্যে এলসি খুলতে না পারায় চলছে না।তবে কারখানাটি বন্ধ থাকলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কিংবা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) কিছুই জানায়নি বাংলাদেশ পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং কোম্পানী কর্তৃপক্ষ।দীর্ঘদিন ওভার দ্য মার্কেটে (ওটিসি) থাকার পর পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ২০২১ সালের ১৩ জুন মূল মার্কেটে ফিরে আসে। এরপর থেকেই কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে শুরু হয় কারসাজি। শেয়ার সংখ্যা কম হওয়ায় কৃত্রিমভাবে শেয়ারদর বাড়ানোর অভিযোগ উঠে।ওটিসি মার্কেটে কোম্পানিটির শেয়ার খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলেছে। ছিল ক্রেতাহীন। কিন্তু ২০২১ সালের ১৩ জুন মূল মার্কেটে ফেরার পর কোম্পানি ঝলসে উঠেছে।মূল মার্কেটে ফেরার সময় কোম্পানীটির প্রতিটি শেয়ার দাম ছিল ১৭ টাকা ৬ পয়সা। চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি প্রতিটি শেয়ার দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩১৩ টাকায়। যদিও এখন প্রতিটি শেয়ার ২২৫ টাকার উপরে কেনাবেচা হচ্ছে।ওটিসি মার্কেট থেকে মূল মার্কেটে ফেরার সময় কোম্পানীর উদ্যোক্তা-পরিচালকরা তিন বছর কোনো শেয়ার বিক্রি করতে পারবেন না, এমন শর্ত থাকলেও শর্ত শিথিল করে কোম্পানীর তিন উদ্যোক্তা-পরিচালককে শেয়ার বিক্রির অনুমতি দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।মূল মার্কেটে ফেরার ১০ মাসের মাথায় কোম্পানীর আবেদনের প্রেক্ষিতে শুধু ঋণ পরিশোধের জন্য চলতি বছরের এপ্রিলে এই শেয়ার বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়।ফলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পেয়ে ঋণ পরিশোধের নামে তিন পরিচালক ১৫ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে। ইতোমধ্যে কোম্পানীর তিন পরিচালক ৯ লাখ ৩৬ হাজার শেয়ার বিক্রি করেছে।ডিএসইর তথ্যানুযায়ী, কোম্পানীর স্পন্সর পরিচালক মোস্তফা কামাল মহিউদ্দিন বিক্রি করেছেন ১ লাখ ৯৮০টি শেয়ার, মাগুরা গ্রুপ দুই দফায় চার লাখ ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট গ্রুপ বিক্রি করেছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার শেয়ার।আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪৪ শতাংশ। আর মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ২৪৪ শতাংশ।অভিযোগ রয়েছে, চড়া দরে শেয়ার বিক্রি করার জন্যই কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। যে কারণে মহামারীর কারণে গত অর্থবছরে কোম্পানীটির রাজস্ব কমলেও ২০২১-২২ অর্থবছরের রাজস্ব মহামারী পূর্বের অবস্থাকেও ছাড়িয়ে গেছে।চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক জুলাই-সেপ্টেম্বরেও কোম্পানীটির মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১.৩৯ শতাংশ। তবে গত নয় মাস যাবত কোম্পানিটির কারখানা বন্ধ রয়েছে।