৫০০ কোটি টাকা দেনা মওকুফ চায় ইউনাইটেড এয়ার
![৫০০ কোটি টাকা দেনা মওকুফ চায় ইউনাইটেড এয়ার](https://stocknewsbd.s3.ap-southeast-1.amazonaws.com/6513/united-bg.jpg)
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) পাওনা সারচার্জসহ প্রায় ৫শ কোটি টাকা মওকুফ চায়।তবে কোম্পানিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয় বকেয়া মওকুফে অসম্মতি জানিয়েছে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি অর্থ বিভাগের উপসচিব চৌধুরী আশরাফুল করিম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই তথ্য জানিয়ে দেয়া হয়।২০০৭ সালে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে প্রথম বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে। দেশ-বিদেশ মিলিয়ে মোট ৩৬টি রুটে কোম্পানিটির ফ্লাইট কার্যক্রম চালু ছিল।একপর্যায়ে ক্ষতির মুখে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। ধীরে ধীরে ফ্লাইট কার্যক্রম সীমিত হতে থাকে। এরপর ২০১০ সালে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।কোম্পানিটির পরিচালকদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো ইউনাইটেড এয়ায়ের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এরপর চালু হলেও ২০১৬ সালে এর কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।ইউনাইটেড এয়ারের মূল মালিক তাসারুল আহমেদ চৌধুরী। তিনি লন্ডনে পলাতক। অভিযোগ রয়েছে, তার দুর্নীতির কারণেই প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হয়েছে।শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইউনাইটেড এয়ারের বিনিয়োগকারী ছিলেন ১ লাখ ৬০ হাজার, যাদের বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৮শ কোটি টাকা।বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।ইউনাইটেড এয়ারের ১০টি উড়োজাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে আটটি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় রয়েছে। বাকি দুটির একটি ভারতে, অন্যটি পাকিস্তানে।পুরনো এসব উড়োজাহাজের কারণে বিমানবন্দর এলাকার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছে বেবিচক। এসব উড়োজাহাজ নিলামে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে বেবিচক।প্রক্রিয়া ঠিক করতে এরেই মধ্যে গঠন করা হয়েছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি। তারাই ঠিক করবে কোন পদ্ধতিতে নিলাম আহ্বান করা যায়।বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বিমানবন্দর এলাকায় থাকা ইউনাইটেড এয়ারের আটটি উড়োজাহাজ ব্যবহারের উপযোগী নয়। এগুলো বিক্রি ছাড়া বিকল্প উপায় নেই। তাই এ কোম্পানি চালু হওয়ার পর আবার যাতে শেয়ারহোল্ডাররা ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, কোনো পাওনা মওকুফ করার ক্ষমতা বেবিচকের নাই। এটা অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিষয়। রানওয়েতে দীর্ঘদিন যাবৎ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা বিমানগুলো উদ্যোগ নিয়েছি নিলামে বিক্রি করার।তিনি আরও বলেন, সিভিল এভিয়েশন যে টাকা পায়, সেটা ইউনাইটেড এয়ারসহ সব এয়ারওয়েজকে পরিশোধ করতে হবে। না করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।২০২১ সালে ইউনাইটেড এয়ারকে বাংলাদেশের মূল বাজার থেকে ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এতে তাদের শেয়ার দর নামতে নামতে ২ টাকার নিচে চলে আসে।ওটিসি মার্কেটে শেয়ার লেনদেন জটিল ও সময়সাপেক্ষ বলে লেনদেনও হচ্ছে না। এতে ৭২ কোটি শেয়ারের মালিকদের টাকা কার্যত শূন্য হয়ে গেছে।এর মধ্যে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ইউনাইটেড এয়ারের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ২০১০ সালে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের প্রধান তাসবিরুল আলম চৌধুরীকে বাদ দিয়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয় কাজী ওয়াহিদুল আলমকে।২০১৬ সালের পর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো ডিভিডেন্ড দিচ্ছে না।