৪২ শতাংশ সিকিউরিটিজের ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার
![৪২ শতাংশ সিকিউরিটিজের ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার](https://stocknewsbd.s3.ap-southeast-1.amazonaws.com/3857/news_324548_1.jpg)
পুঁজিবাজারের টানা দরপতন ঠেকাতে এ বছরের ৩১ জুলাই থেকে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের দরের ওপর ফ্লোর প্রাইস (শেয়ারদর কমার সর্বনিম্ন সীমা) আরোপ করেছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজারের লেনদেন কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এবার ১৬৯টি কোম্পানি ও ফান্ড বা ৪২ শতাংশ সিকিউরিটিজের ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে।বিএসইসির আদেশে বলা হয়েছে, এ বছরের ২৮ জুলাই জারি করা ফ্লোর প্রাইস আরোপসংক্রান্ত নির্দেশনা ১৬৯ কোম্পানি ও ফান্ডের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। এসব সিকিউরিটিজের দর কমার ক্ষেত্রে ১ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার আরোপ করা হয়েছে। এতে একদিনে সর্বোচ্চ ১ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারবে এসব সিকিউরিটিজের দর। অন্যদিকে এ কোম্পানি ও ফান্ডগুলোর শেয়ারদর বাড়ার ঊর্ধ্বসীমা ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর জারি করা নির্দেশনা অনুসারে কার্যকর হবে। এ নির্দেশনা অনুসারে দর ২০০ টাকা পর্যন্ত ১০ শতাংশ হারে সার্কিট ব্রেকার প্রযোজ্য হবে। দর ২০০ টাকার ওপর হলে এবং ৫০০ টাকা পর্যন্ত ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার থাকবে। ৫০০ টাকার বেশি এবং ১ হাজার টাকা পর্যন্ত দর থাকলে সেক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার হবে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। দর ১ হাজার টাকার বেশি এবং ২ হাজার টাকা পর্যন্ত ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে সার্কিট ব্রেকার আরোপ করা হবে। দর ২ হাজার টাকার ওপরে থাকলে এবং ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত সার্কিট ব্রেকার হবে ৫ শতাংশ। আর দর ৫ হাজার টাকার বেশি হলে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্কিট ব্রেকার আরোপ করা হবে। আজ থেকেই এ আদেশ কার্যকর হবে এবং পরবর্তী নির্দেশনা দেয়ার আগ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বণিক বার্তাকে বলেন, সাস্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজারে লেনদেন অনেক কমে গিয়েছিল। কমিশনের পক্ষ থেকে বাজারদর ফ্লোর প্রাইস স্পর্শ করেছে এবং বাজারে সামান্য লেনদেন হচ্ছে এমন সিকিউরিটিজ চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে যেসব সিকিউরিটিজের বাজার মূলধন কম এবং সূচকের ওপর প্রভাব কম এমন ১৬৯টি সিকিউরিটিজের ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হয়েছে। এতে করে বিনিয়োগকারীরা তাদের পোর্টফোলিও পুনর্বিন্যাস করতে সক্ষম হবেন এবং বাজারের প্রতিও তাদের আস্থা ফিরে আসবে।এ বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই অস্থিরতা শুরু হয় দেশের পুঁজিবাজারে। এ অবস্থায় দরপতন ঠেকাতে এ বছরের ২৮ জুলাই দ্বিতীয়বারের মতো ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে বিএসইসি।এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ৯৮০ পয়েন্টে। সেদিন দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪৪২ কোটি টাকা। এর দুদিন পর ৩১ জুলাই থেকে পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস কার্যকর হয়। সেদিন ডিএসইএক্স ছিল ৬ হাজার ১৩৪ পয়েন্টে। টাকার অংকে লেনদেন হয় ৫৬৮ কোটি টাকা। এর পর থেকে বেশ কিছুদিন বাজারে ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা যায়। এর মধ্যে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ডিএসইএক্স ৬ হাজার ৬০১ পয়েন্টে উন্নীত হয়। এর একদিন পরেই লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ হাজার ৮৩২ কোটি টাকায়, যা এ বছরের সর্বোচ্চ। তবে এরপর থেকেই সূচক ও লেনদেন ক্রমশ নিম্নমুখী হতে শুরু করে। বিশেষ করে গত ১০ নভেম্বর থেকে ডিএসইতে দৈনিক লেনদেন ৮০০ কোটি টাকার নিচে নেমে যায়। এর পর থেকে সূচকে সামান্য ওঠানামা দেখা গেলেও লেনদেন ক্রমেই কমতে থাকে। গত ৬ ডিসেম্বর লেনদেন ২৭২ কোটি টাকায় নেমে যায়। সর্বশেষ গতকাল ডিএসইএক্স দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৯৯ পয়েন্টে। এদিন ডিএসইতে ৩৩৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।