১১২ টাকা ইস্যু মূল্যের ক্রাউন সিমেন্টের ১ টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা

Date: 2022-10-26 21:00:19
১১২ টাকা ইস্যু মূল্যের ক্রাউন সিমেন্টের ১ টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা
হোয়াট হ্যাপেনড কুদ্দুস? লুক স্যার ক্রাউন সিমেন্ট, সো? মেড ইন বাংলাদেশ স্যার! ইওর বিল্ডিং মাই কান্ট্রিজ সিমেন্ট স্যার! উই আর ভেরি প্রাউড স্যার! এভাবে প্রবাসিদের নিয়ে গর্বিত করে প্রচারনা চালালেও ক্রাউন সিমেন্ট নিয়মিত হতাশ করছে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের।ক্রাউন সিমেন্টের পণ্যের উপর বিশ্ব আস্থা রাখে বলে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ দাবি করলেও শেয়ারবাজারে অনাস্থায় ডুবছে। ক্রাউন সিমেন্ট রপ্তানির শীর্ষ ও বাংলাদেশের গ্লোবাল সিমেন্ট বলে দাবি করা কোম্পানিটিই এখন লোকসানে নিমজ্জিত।মুনাফায় ধসের কারন হিসাবে ক্রাউন সিমেন্ট কর্তৃপক্ষ কাচাঁমালের দাম ও ভাড়া বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় লোকসান এবং মিনিমাম ট্যাক্স ধার্য করাকে উল্লেখ করে ডিএসইকে জানিয়েছেন। যা ডিএসইর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।তবে একইসময়ে ব্যবসায় উন্নতি হয়েছে সিমেন্ট খাতের আরেক কোম্পানি লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের। যে কোম্পানিটির জন্য শুধুমাত্র অভিহিত মূল্যে শেয়ার ইস্যু করা হয়েছিল। এই কোম্পানিটির ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর ২২) শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ২.৮৫ টাকা। যার পরিমাণ আগের বছরের একইসময়ে হয়েছিল ২.৬৬ টাকা। তবে এই কোম্পানির পর্ষদ ৬ মাসের (জানুয়ারি-জুন ২২) ব্যবসার উপরই অন্তর্বর্তীকালীন ১৫% নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। যে বহূজাতিক কোম্পানিটির ২০২১ সালে ইপিএস হয়েছিল ৩.৩৪ টাকা। যার উপর ভিত্তি করে রেকর্ড ২৫% নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছিল।অথচ ভালো ব্যবসা দেখিয়ে শেয়ারবাজার থেকে বুক বিল্ডিংয়ে উচ্চ দরে শেয়ার ইস্যু করে ক্রাউন সিমেন্ট। তবে এখন সেই কোম্পানি শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেয় মাত্র ১০ শতাংশ বা ১ টাকা। যে কোম্পানিটিতে বিনিয়োগ করে ক্যাপিটাল ও লভ্যাংশ উভয় ক্ষেত্রেই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয়েছে।কোম্পানিটি ২০১০-১১ অর্থবছরে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজারে আসে। ওইসময় প্রতিটি শেয়ার ১১১.৬০ টাকা করে ইস্যু করে। এতে প্রতিটি শেয়ারে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে ১০১.৬০ টাকা। কিন্তু সেই কোম্পানি সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরের ব্যবসায় মাত্র ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। যা ইস্যু মূল্য বিবেচনায় ১ শতাংশেরও কম বা ০.৯০ শতাংশ।এ কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পরে ২০১১ সালে ৩৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেওয়ার পরে প্রতি শেয়ারে ব্যয় (কস্ট) দাঁড়ায় ৮২.৬৭ টাকা। এরপরে ২০১২ সালে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেওয়ার পরে তা নেমে আসে ৭৫.১৫ টাকায়। এখন সেই কস্ট ভ্যালুর বাজার দর আছে ফ্লোর প্রাইস ৭৪.৪০ টাকায়। কোন ক্রেতা নেই। এতে প্রতিটি শেয়ারে ক্যাপিটাল লোকসান আছে ০.৭৫ টাকা।এদিকে ওই ৭৫.১৫ টাকায় গত ১১ বছরে লভ্যাংশ দিয়েছে ২০ টাকা। তবে ৭৫.১৫ টাকা ব্যাংকে এফডিআরে ৫ শতাংশ সুদেও বছরে ৩.৭৬ টাকা পাওয়া যেত। যাতে ১১ বছরে আসত ৪১.৩৬ টাকা। একইসঙ্গে ০.৭৫ টাকা ক্যাপিটাল লোকসান থেকে রক্ষা হত।ক্রাউন সিমেন্ট থেকে ২০১৩ সালে ৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করা হয়। এরপরে ২০১৪ সালে কমিয়ে ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হয়। যা ধারাবাহিকভাবে কমে ২০১৫ সালে ২৫ শতাংশ, ২০১৬ সালে ২০ শতাংশ, ২০১৭ সালে ২০ শতাংশ, ২০১৮ সালে ১৫ শতাংশ, ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ, ২০২০ সালে ১০ শতাংশ ও ২০২১ সালে ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। আর ২০২২ সালে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।এমআই সিমেন্টের আইপিও পূর্ব ২০০৮-০৯ অর্থবছরের ৯.৩৯ টাকার শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরে নেমে এসেছে ঋণাত্মক (১.৫৪) টাকায়। ১৩ বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ইপিএস কমেছে ১০.৯৩ টাকা বা ১১৬ শতাংশ।

Share this news